ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলির মধ্যে নিয়মিত আদান-প্রদানের লক্ষ্যে এক রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অক্টোবরে প্রাগে এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে গেলে নানা কঠিন শর্ত পূরণ করতে হয়৷ বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষা করেও ব্রাসেলস থেকে সহজে ডাক আসে না৷ রাজনৈতিক চাপের মুখে নীতিগতভাবে ইউক্রেনের মতো দেশকে ইইউ সদস্য করার উদ্যোগ শুরু হলেও বাস্তবে সেই পরিকল্পনা কার্যকর করা জটিল৷ অন্যদিকে ইইউ সদস্য থেকেও ব্রিটেন এই রাষ্ট্রজোট ত্যাগ করেছে৷ ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ইইউ-র সদস্য না হয়েও কি ইউরোপীয় পরিবারের অংশ হওয়া সম্ভব? নিয়মিত সংলাপের কাঠামো কি উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হতে পারে?
এমন জটিলতা এড়াতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ গত মে মাসে এক ‘ইউরোপীয় রাজনৈতিক জোট’ গড়ে তোলার যে প্রস্তাব রেখেছেন, সেটির রূপরেখা এবার স্পষ্ট হতে শুরু করেছে৷ এমন প্রস্তাবিত জোট গড়ে তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে৷ আগামী ৬ অক্টোবর চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে প্রথম বৈঠকে ৪৪টি দেশ দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ ইউক্রেন, তুরস্ক, ব্রিটেন ও সুইজারল্যান্ডের মতো ইইউ-র কাছের দেশের পাশাপাশি সুদূর আর্মেনিয়া ও আজেরবাইজানের মতো দেশও এমন জোটে অংশ নেবার সুযোগ পাবে৷ ফলে ২৭ সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এ সব দেশের সংলাপের নতুন মঞ্চ সৃষ্টি হবে৷
‘ইউরোপিয়ান পলিটিকাল কমিউনিটি’ ইইউ এবং বৃহত্তর ইউরোপীয় এলাকার দেশগুলির মধ্যে আদানপ্রদান তরান্বিত করতে চায়৷ বলা বাহুল্য, প্রাগে প্রথম বৈঠকে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে৷ জ্বালানি সংকট ও বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও আলোচনাসূচিতে স্থান পাবে৷ এর ঠিক এক দিন পর, অর্থাৎ ৭ অক্টোবর ইইউ শীার্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি দেশ হিসেবে চেক প্রজাতন্ত্র দুটি সম্মেলনই আয়োজন করছে৷
মাক্রোঁর প্রস্তাব অনুযায়ী আলোচনার এমন মঞ্চের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ গত মাসে প্রাগে ইউরোপের ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত এক ভাষণে তিনি এখনও পর্যন্ত এমন সুযোগের অভাবের কথা স্বীকার করেন৷ তবে তার মতে, প্রস্তাবিত এই মঞ্চ ইইউ সম্প্রসারণের বিকল্প হতে পারে না৷
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ ছয় মাস অন্তর নতুন এই রাজনৈতিক মঞ্চের শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তাব রেখেছেন৷ ইইউ-র বাকি সদস্য ও বাইরের আমন্ত্রিত দেশগুলি গোটা বিষয়টি সম্পর্কে কতটা উৎসাহ দেখাবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ বিশেষ করে বর্তমানে তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যে যে উত্তেজনা চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সম্মেলনে তুরস্কের উপস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ উল্লেখ্য, দীর্ঘকাল আগেই ইইউ সদস্য হবার প্রক্রিয়া শুরু হলেও তুরস্ক এখনও এই রাষ্ট্রজোটের বাইরেই রয়েছে৷ তাছাড়া রাজনৈতিক কাঠামোয় কোনও বাধ্যবাধকতা না থাকায় অংশগ্রহণকারীদের উপর কোনও সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া বা তা কার্যকর করার চাপ থাকবে না৷ সে ক্ষেত্রে উত্তেজনা, মনোমালিন্য বা বিরোধ মেটানো আদৌ সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)