গতকালই গুজরাট উপকূলের থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ কিমি দূরে ভারতগামী একটি জাহাজে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল। সেই জাহাজে ২০ জন ভারতীয় ছিলেন। জাহাজটি ছিল লাইবেরিয়ান পতাকাবাহক। আর গতকালই আরও একটি জাহাজে হামলা চালানো হয় লোহিত সাগরে। জানা গিয়েছে, সেই জাহাজে ছিল অশোধিত জ্বালানি তেল। সেই জাহাজে ২৫ জন ভারতীয় ক্রু ছিলেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবারই লোহিত সাগরে দু'টি জাহাজে হামলা চালানো হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল এই জাহাজটি। (আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ার মন্দিরে খলিস্তানি হামলা নিয়ে মুখ খুলল US, হাঁটল না 'কানাডার পথে')
এর আগেও লোহিত সাগরে ভারতগামী জাহাজে হুথি জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল। তবে ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজে ড্রোন হামলা ঘটেনি। এই ঘটনার নেপথ্যেও ইয়েমেনের হুথি জঙ্গি গোষ্ঠী আছে বলে জানা গিয়েছে। ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে দু'টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল আন্তর্জাতিক জলসীমায়। সেই মিসালেই আক্রান্ত হয় দু'টি জাহাজ। মার্কিন নৌবাহিনীর দাবি ছিল, ভারতের পতাকাবাহী জাহাজও আক্রান্ত হয়েছিল হামলায়। এই বিষয়ে আমেরিকার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লোহিত সাগরে ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজটি হুথি জঙ্গিদের হামলার শিকার হলে সাহায্যের আর্তি জানায়। সেই সময় সেই অঞ্চলে ছিল একটি মার্কিন রণতরী। হামলার শিকার এই জাহাজটির মালিক গ্যাবনের এক সংস্থা। এটির নাম - 'এমভি সাইবাবা' এদিকে এই হামলায় জাহাজে থাকা কোনও নাবিক হতাহত হননি বলেই জানা গিয়েছে প্রাথমিকভাবে। আর আজ ভারতীয় নৌবাহিনী জানাল, ভারতীয় পতাকাবাহী নয়, বরং গ্যাবনের পতাকাবাহক জাহাজ ছিল এমভি সাইবাবা।
আরও পড়ুন: 'ভারতের এক্তিয়ার নেই', পান্নুনকাণ্ডে ধৃত নিখিলকে নিয়ে মুখ খুলল চেক প্রজাতন্ত্র
এর আগে গতকালই গুজরাট উপকূল থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে ভারতগামী এক জাহাজে ড্রোন হামলা ঘটেছিল। কয়েকদিন আগেই ভারতগামী এক জাহাজ অপহরণ করেছিল ইয়েমেমের হুথি জঙ্গি গোষ্ঠী। এরপর সম্প্রতি আবার আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের পাল্লায় পড়েছিল একটি পণ্যবাহী জাহাজ। আর ২৩ ডিসেম্বর ভারতগামী একটি ট্যাঙ্কার জাহাজ ড্রোন হামলার শিকার হয়। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি ঠিকই। তবে এই অঞ্চলে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী। এদিকে পেন্টাগনের দাবি, ভারতগামী জাহাজে হামলার নেপথ্যে রয়েছে ইরানের একটি ড্রোন। রিপোর্ট অনুযায়ী, জাহাজটির নাম - 'কেম প্লুটো'। এই জাহাজটিকে ডাচ একটি সংস্থা পরিচালনা করছে। জানা গিয়েছে, হামলার পর মার্কিন নৌবাহিনী জাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ করে। ইজরায়েল যোগ থাকার জেরেই এই জাহাজে ইরান থেকে হামলা চালানো হয় বলে প্রাথমিক ধারণা।
আরও পড়ুন: ফরাসি বিমানবন্দরে আটকে পাচারকারীদের 'শিকার' ৩০০ ভারতীয়, কী বলছে উড়ান সংস্থা?
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত মহাসাগরে একটি পণ্যবাহী বাণিজ্যিক জাহাজে ড্রোন হামলা চালানো হয় শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ। ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। এদিকে জাহাজে ২০ জন ভারতীয় নাবিক ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তবে জাহাজের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ট্যাংকারটির সাথে ইজরায়েল যোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অবশ্য জাহাজটির মালিক জাপানি একটি সংস্থা। এরপরই ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন্স জানিয়েছে, ড্রোন হামলার জেরে তীব্র বিস্ফরণ হয় জহাজের ডেকে।
এদিকে কেম প্লুটো ট্যাঙ্কার জাহাজে হামলার বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং নৌবাহিনী। হামলা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অবশ্য ভারতীয় নৌবাহিনীর তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি এই নিয়ে। জানা যায়, জাহাজে হামলার পরই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছিল ভারতীয় উপকলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ। এদিকে গুজরাট উপকূলের কাছে এই হামলার পরেই ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন্সের তরফ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। একটি বার্তায় বলা হয়েছে, এই অঞ্চল দিয়ে কোনও জাহাজ গেলে যাতে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।