আপনি কি কখনও শুনেছেন যে সন্তানকে নিয়মিত স্কুলে না পাঠালে অভিভাবকদের জেলে পাঠানো হতে পারে? হ্যাঁ ঠাট্টা তামাশা নয়, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী, মিসৌরির অভিভাবকরা তাদের বাচ্চারা নিয়মিত স্কুলে না পাঠালে কারাগারে যেতে পারেন।
কিন্তু প্রশ্ন নিয়মিত বলতে ঠিক কী বোঝান হচ্ছে? বিষয়টি মিসৌরি সুপ্রিম কোর্টের সামনে তোলা হয়েছে যেখানে দুই জন অভিভাবক প্রশ্ন করা হয়েছে স্কুল অনুসারে 'নিয়মিত' যাওয়ার মানে কী। রিপোর্টে বলা হয়েছে দুইজন অভিভাবকের শিশুরা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে লেবানন আর-থ্রি স্কুলে মাসে ১৫ দিনের ক্লাসে অনুপস্থিত ছিল। মায়েরা তাদের বাচ্চার অনুপস্থিতির কারণ হিসাবে কানের সংক্রমণ, সর্দিকাশি এবং একজন ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার উল্লেখ করেছেন। কিন্তু উভয়কেই প্রসিকিউটরদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল এবং জেলে পাঠানো হয়েছিল।
দক্ষিণ-পশ্চিম মিসৌরির স্কুলের কর্মকর্তারা বলেছেন যে তাদের উপস্থিতির হার ৯০ শতাংশ বজায় রাখা উচিত। যদি শিক্ষার্থীরা না আসে তাহলে তাদের অভিভাবকদের সাথে ফোনকলের মাধ্যমে বা সরাসরি যোগাযোগ করা হয়। কোনও কারণে অভিভাবকরা উপস্থিতি না হলে প্রসিকিউটরদের কাছে রেফার করা হয়। এহেন পদক্ষেপে স্বাভাবিক কারণের বিরক্ত অভিভাবকদের একাংশ এবং সাধারণ নাগরিকবৃন্দ।
টামারেই লারুই নামের একজন মায়ের কথা শোনা যাচ্ছে। তার চারটি ছেলে কোভিড অসুস্থতা এবং অন্যান্য সমস্যার কারণে একাধিকবার স্কুলে যেতে পারেনি। এমনকি তার প্যানিক অ্যাটাকও হয়েছিল যার ফলে সে তার ছেলেদের স্কুলে পৌঁছে দিতে দেরি করেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল অনুসারে তিনি 15 দিন জেল কাস্টডি পান। একদল বিশেষজ্ঞ আপত্তি তুলেছেন এই শাস্তি প্রদানের বিষয়টি নিয়ে। ‘নিয়মিত উপস্থিতি’ বা ‘দীর্ঘস্থায়ী অনুপস্থিতি’ বলতে কী বোঝায় তার কোনও স্পষ্টতা নেই এবং এখন অভিভাবকরা এই বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের অনুপস্থিতির জন্য অভিভাবকদের শো কজ বা সতর্কীকরণের নজির আমরা বহুক্ষেত্রেই দেখতে পাই, কিন্তু এভাবে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণে অভিভাবকদের জেলে যাওয়ার ঘটনা সত্যিই বিরল। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রেই সঙ্গত কারণেই শিশুদের স্কুলে উপস্থিত করতে পারেননি অভিভাবকরা। বিশেষত বহু কেসই ২০২১-২২ সালেই, অর্থাৎ বিশ্বজুড়ে কোভিড অতিমারী পরবর্তীতে সর্দিকাশি বা অন্যান্য সমস্যার কারণে স্কুলে অনুপস্থিত ছিল শিশুরা। এখন কোর্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষাতেই দিন গুনছেন অভিভাবকরা।