২০০৬ সালের ১ জুলাই। একের পর এক ট্রেনে বিস্ফোরণ হয়েছিল মুম্বইতে। সেই দিনে কোনওরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টান্ট চিরাগ চৌহান। এখন বয়স ৩৭ বছর। হুইল চেয়ারে বন্দি জীবন। সেই ১৭ বছর আগে তাঁর জীবনটা এমন ছিল না। এখনও সেদিনের টিকিট তিনি রেখে দিয়েছেন। সেই ভয়াবহ স্মৃতি।খবর পিটিআই সূত্রে।
প্রসঙ্গত সেদিন ১৫ মিনিটের ব্যবধানে অন্তত সাতটি বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেই সময় বিস্ফোরণে অন্তত ১৮০জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন চিরাগ।। সেই সময় চিরাগ ছিলেন সদ্য তরুণ। ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলেন। খার ও সান্তাক্রুজ স্টেশনের মাঝে ভয়াবহ বিস্ফোরণ।তাঁর মেরুদণ্ডে ভয়াবহ আঘাত লেগেছিল। এরপর থেকেই তিনি হুইল চেয়ারে বন্দি। টুইট করেছেন এই চিরাগ। তিনি লিখেছেন…
‘এটা আমার মুম্বই লোকালের টিকিট। ১১ জুলাই ২০০৬ সালের পর ১৭টা বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও এই টিকিটটি রেখে দিয়েছি। আমার স্পাইনাল কর্ডে আঘাত লেগেছিল। তারপর থেকেই হুইল চেয়ারে রয়েছি।’
‘কিন্তু তারপরেও আমাকে থামানো যায়নি। ২০০৯ সালে আমি সিএ কমপ্লিট করি। এরপর ব্যাঙ্কে চাকরি শুরু করি। পরে নিজের সিএ ফার্ম চালু করি। এখন এলএলবি পড়ছি। আমি বলতে চাই, জীবন সব প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে দেয়। প্রতিকূলতার পথেই সুখের দিন আসে। আমরা জীবনের কঠিন সময় দেখেছি। কিন্তু আমাদের থেমে থাকলে হবে না। এগিয়ে যেতে হবে। একবার এক পা বাড়িয়ে দেখুন,আপনি কতটা এগিয়ে যেতে পারেন।’
‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশে এই বিস্ফোরণের ইতিহাস ছিল। তবে মোদী ক্ষমতায় আসার পরে সেই প্রবণতা অনেকটাই কমেছে। সন্ত্রাসবাদী হামলায় সেভাবে সিভিলিয়ানদের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।’
‘কখনও হতাশ হবেন না। যত কঠিন সময়ই আসুক না কেন। পরিস্থিতির মধ্য়ে সবথেকে ভালো যেটা করা যায় সেটাই করুন। ভগবানের ইচ্ছার উপর ভরসা রাখুন। জীবন খুব সুন্দর, জীবনটাকে ভালো করে বাঁচুন, হাসতে থাকুন এই জীবনে।’
জীবনে পাহাড় প্রমাণ প্রতিকূলতা। শিড়দাড়া একেবারে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তারপরেও হাল ছাড়েননি তিনি। চলাফেরাও ভালো করে করতে পারেননা। তারপরেও তিনি পড়াশোনা করে এগিয়ে গিয়েছেন। সেই চিরাগই কার্যত প্রদীপ জ্বালালেন লক্ষ হতাশাগ্রস্ত মানুষের হৃদয়ে। তাঁর মূল কথা, হাল ছাড়বেন না। ভগবানের ইচ্ছার উপর ভরসা রাখুন। জীবন খুব সুন্দর, জীবনটাকে ভালো করে বাঁচুন, হাসতে থাকুন এই জীবনে।