কর্নেল আশুতোষ শর্মার মোবাইল ফোন থেকে ভেসে আসা কণ্ঠস্বরই জঙ্গি নিকেশ অভিযানে সাফল্যের চাবিকাঠি তুলে দেয় নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে। রবিবার কুপওয়ারা সংঘর্ষের পরে সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে এই তথ্য।
জানা গিয়েছে, হান্দওয়ারার যে বাড়িতে ঘাঁটি গেড়েছিল দুই সন্ত্রাসবাদী, সেই পরিবারের সদস্যদের পণবন্দি রেখেছিল তারা। তাঁদের উদ্ধার করতে ওই বাড়িতে মেজর অনুজ সুদ (৩০), নায়েক রাজেশ কুমার (২৯), ল্যান্স নায়েক দীনেশ সিং (২৪) ও জম্মু ও পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর সাগীর পাঠান ওরফে কাজিকে (৪১) নিয়ে শনিবার বিকেলে প্রবেশ করেন সাহসিকতার জন্য একাধিকবার পুরস্কারপ্রাপ্ত কর্নেল অশুতোষ শর্মা।
পণবন্দিদের বিকেল ৫.৩০ নাগাদ উদ্ধার করতে সফল হলেও বাড়ির ভিতরেই আটকে পড়েন উদ্ধারকারী নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। বেশ কিছু ক্ষণ গুলির লড়াই চললেও উদ্ধারকারী বাহিনীর সদস্যদের জখম হওয়ার আশঙ্কায় এক সময় গুলিবৃষ্টি বন্ধ করতে বাধ্য হয় বাড়ি ঘিরে থাকা সে্না ও পুলিশের যৌথ বাহিনী।
আরও পড়ুন: হান্দওয়ারায় শহিদ ২ বার সাহসিকতার মেডেলপ্রাপ্ত কর্নেল, পিতৃহারা ১২ বছরের মেয়ে
জম্মু ও কাশ্মীরের এক কর্তা এ দিন হিন্দুস্তান টাইমস-কে জানিয়েছেন, ‘সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সব রকম চেষ্টা করেও উদ্ধারকারী বাহিনীর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ স্থাপন করতে ব্যর্থ হই। ওই সময় আমাদের তরফ থেকে গুলি চালানো বন্ধ থাকে। রাত ১০টায় কর্নেল শর্মার মোবাইল ফোনে অপরিচিত কণ্ঠস্বর বলে ওঠে, আস্সালামওয়ালেইকুম। তখনই আমরা বুঝতে পারি যে, কর্নেলের ফোন সন্ত্রাসবাদীদের দখলে চলে গিয়েছে।’
বোঝা যায়, একমাত্র একটি উপায়েই কর্নেলের ফোন কব্জা করতে পেরেছে সন্ত্রাসবাদীরা। উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই বুঝেই নতুন উদ্যমে ফের সন্ত্রাসবাদীদের নিশানা করে গুলি চালাতে শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনী। রবিবার ভোররাত পর্যন্ত নাগাড়ে চলে গুলির লড়াই। দিনের আলো ফোটার পরে প্রতিপক্ষর সাড়া না পেয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে বাহিনী।
আরও পড়ুন: হান্দওয়ারায় শহিদ সুরক্ষাকর্মীদের বীরত্ব ও আত্মবলিদান দেশবাসী ভুলবে না : মোদী
বাড়ির ভিতরে পাওয়া যায় দুই দুষ্কৃতীর দেহ। তাদের একজনকে শনাক্ত করা যায় পাক নাগরিক হায়দার হিসেবে। কাশ্মীরে লস্কর-ই-তৈবা সংগঠনের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এই কম্যান্ডারকে বহু দিন থেকে খুঁজছিল নিরাপত্তা বাহিনী। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় পাঁচ বীর শহিদের দেহও।