গত ৪ মে মণিপুরে ঘটে গিয়েছিল এক বর্বর ঘটনা। সেই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এদিকে মণিপুরে বিক্ষিপ্ত হিংসা জারি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মণিপুর ইস্যু নিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সম্প্রতি দেখা করেছিলেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। তাঁরা একটি স্মারকলিপি তুলে দেন রাষ্ট্রপতির হাতে। সঙ্গে তাঁরা দাবি জানান, রাষ্ট্রপতি যেন দুই মণিপুরী নারীকে রাজ্যসভায় মনোনীত করেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী মোদীর মণিপুরে যাওয়া উচিত বলেও দাবি জানান বিরোধী সাংসদরা।
এর আগে এই ভিডিয়ো কাণ্ডের ৭৭ দিন পর মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এরপর আরও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যে ব্যক্তি সেই ভিডিয়ো তুলেছিল, তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে সেই মোবাইলও। জানা যায়, ভাইরাল ভিডিয়োর ঘটনাটি ঘটে ইম্ফল থেকে প্রায় ৩৫ কিমি দূরে কাংপোকপি জেলায়। সেই ঘটনায় নির্যাতিতা মহিলাদের পরিবারের দুই সদস্যকেও খুন করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী বাদল অধিবেশনের আগে এই ঘটনাকে 'জাতির লজ্জা' হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। তবে সংসদে এই নিয়ে মোদীর বিবৃতির দাবিতে শোরগোল জারি রেখেছেন বিরোধীরা। প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে মুলতুবি হচ্ছে অধিবেশন।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। রেহাই পাচ্ছে না মহিলা ও শিশুরাও। এরই মধ্যে সম্প্রতি মণিপুরে তিন মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো এবং গণধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছিল। সেই ঘটনার বিভীষিকাময় এক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসায় মৃতের সংখ্যা এখন ১৫০ ছুঁই ছুঁই।