'যিশুই সর্বোচ্চ,' প্রচার করেছিলেন এক খ্রিস্টান ব্যক্তি। সেই 'অপরাধে' তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিল পাকিস্তানের আদালত। আশফাক মাসিহ নামের ওই মেকানিককে প্রায় পাঁচ বছর আগে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
২০১৭ সালের জুনে আশফাক লাহোরে এক ব্যক্তির মোটরবাইক সারিয়েছিলেন। অথচ তারপরে ওই ব্যক্তি তাঁকে পুরো টাকা দেননি। উল্টে তিনি দাবি করেন, ইসলাম ধর্ম সততার সঙ্গে পালন করেন তিনি। সেই কারণে তাঁকে ছাড় দেওয়া উচিত্।
আশফাক প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তিনি খ্রিস্ট ধর্মে বিশ্বাস করেন। এই নিয়ে দু'জনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। ভিড় জমে যায়। উত্তেজিত জনতা মাসিহকে নবী মহম্মদকে 'অসম্মান' করার অভিযোগ তোলে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। আশফাককে গ্রেফতার করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে 'ব্লাসফেমি'(ধর্ম অবমাননা) মামলা দায়ের করে। আশফাককে যখন গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৮ বছর। তাঁর এক স্ত্রী ও কন্যাসন্তান রয়েছে। ২০১৯ সালে একবার মায়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন। রিপোর্ট বলছে, ধর্মীয় হিংসার শিকার হওয়ার ভয়ে আশফাকের খ্রিস্টান পরিবার লাহোর ছেড়ে দূরে কোথাও পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে বেশ মামুলি ব্যাপার। সাম্প্রতিক অতীতে ব্লাসফেমি আইনে বেশ কয়েক জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতেই, এক ২৬ বছর বয়সী মহিলাকে স্রেফ হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে 'ইসলাম বিরুদ্ধ' পোস্ট করার জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অভিযোগ, তিনি নবি মহম্মদের একটি ব্যঙ্গচিত্র স্ট্যাটাসে দিয়েছিলেন।
এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে লাহোরের একটি স্থানীয় আদালত একজন স্কুলের অধ্যক্ষকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। স্কুলে পড়ুয়াদের কাছে তিনি ইসলামের সমালোচনা করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল।