বয়স হয়ে গিয়েছে। এই অজুহাত দেখিয়ে লালকৃষ্ণ আদবানি থেকে মুরলীমনোহর যোশি–সহ দলের প্রবীণ নেতাদের রাজনীতির বানপ্রস্থে পাঠিয়েছেন তিনি। অথচ ‘আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখাও’ এই আপ্তবাক্য নিজের ক্ষেত্রে মানতে নারাজ নরেন্দ্র মোদী। যেখানে দল ও সরকারে নতুন প্রজন্মকে তুলে আনার বার্তা দেওয়া হচ্ছে সেখানে নরেন্দ্র মোদী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন জিতে এলেও প্রধানমন্ত্রীর আসন ছেড়ে দিতে নারাজ।
প্রধানমন্ত্রীর বিষয়টি ঠিক কী? প্রধানমন্ত্রী নানা সভা–সমাবেশে বলে থাকেন, ‘আমার কোনও পদের লোভ নেই। যে কোনও সময় কাঁধে ঝোলা নিয়ে বেরিয়ে পড়ব’। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কথার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। এবার তিনি বুঝিয়ে দিলেন, ২০২৪ সালেও তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অবসর নিচ্ছেন না। নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনার আড়ালে তিনি দল ও যোগী আদিত্যনাথকে বার্তা দিলেন, তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড় থেকে সরে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই।
ঠিক কী বলেছেন প্রধানমন্ত্রী? গুজরাতে ‘উৎকর্ষ সমারোহ’ অনুষ্ঠানে ভাষণের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন। সেখানেই তিনি বলেন, ‘আমাকে বিরোধী দলের এক নেতা বলেছেন, আপনি দু’বার প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনীত হয়েছেন, এরপর আর কী চান? আসলে ওই বিরোধী নেতার মনোভাব হল, দু’বার প্রধানমন্ত্রী হলেই সব চাহিদার সমাপ্তি ঘটে যায়। কিন্তু আমি সেই প্রকৃতির মানুষ নই। সমস্ত জনস্বার্থবাহী প্রকল্প যতক্ষণ না ১০০ শতাংশ বাস্তবায়িত হচ্ছে, ততক্ষণ বিশ্রাম নেব না।’ এই মন্তব্যের পরই তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে চান স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, আগামী ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর বয়স হবে ৭৩ বছর। আর দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্র–রাজ্য বিভিন্ন সিনিয়র, প্রবীণ বিজেপি নেতাকে প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস দেওয়া হয়েছে। কেউ চলে গিয়েছেন বানপ্রস্থে। কেউ রাজ্যপাল হয়েছেন। সেখানে নরেন্দ্র মোদী নিজেই বার্তা দিলেন, ২০২৪ সালে বিজেপি জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনিই। অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকবেন। তখন তাঁর বয়স হবে ৭৮ বছর! স্বাধীন ভারতে তিনবার টানা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন একমাত্র জওহরললাল নেহরু। সম্প্রতি শরদ পাওয়ার তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।