তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে জোড়া অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। তারইমধ্যে ২০১৮ সালে লোকসভায় নরেন্দ্র মোদীর একটি ভাষণের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল। যে ভিডিয়োয় বিরোধী নেতাদের উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ২০২৩ সালে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিন। আর ২০২৩ সালে ঠিক সেটাই হল। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় পৃথকভাবে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন কংগ্রেসের সাংসদ গৌরব গগৈ (ইন্ডিয়া জোটের হয়ে) এবং ভারত রাষ্ট্র সমিতির সাংসদ নাগেশ্বর রাও। ইতিমধ্যে যে প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
মোদীর যে ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, তা একাধিক বিরোধী দলের সমর্থনে তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) আনা অনাস্থা প্রস্তাবে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের জয়ের পরে সেই মন্তব্য করেছিলেন মোদী। এনডিএয়ের পক্ষে ৩০০-র বেশি ভোট পড়েছিল। সেই জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমরা ফের শুভকামনা করতে চাই। আপনারা এত প্রস্তুতি নিন, এত প্রস্তুতি নিন যাতে ২০২৩ সালে আবারও অনাস্থা প্রস্তাব আনার সুযোগ পান।’
মোদীর সেই মন্তব্য শুনে শাসক দলের সাংসদরা হাসতে থকেন। তবে বিরোধীদের বেঞ্চ চিৎকার করে কেউ বলে ওঠেন, 'এটাই অহংকারের পরিচয়।' তাতে কিছুটা বিরক্ত হন মোদী। তিনি বলেন, 'এটা সমর্পণ ভাব। এটা সমর্পণ ভাব। অহংকারের পরিণামে ৪০০ থেকে ৪০ হয়ে গিয়েছেন। অহংকারের পরিণামে ৪০০ থেকে ৪০ হয়ে গিয়েছেন (কংগ্রেসেকে আক্রমণ শানিয়ে)। সেবা ভাবের কারণে দুই থেকে এখানে বসে গিয়েছি। দুই থেকে এখানে বসে গিয়েছি (দু'জন সাংসদ থেকে । আপনারা কোথায় ছিলেন, আর কোথায় পৌঁছে গিয়েছেন। আরে অন্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলতে হচ্ছে।'
রাজনৈতিক মহলের মতে, এবারের অনাস্থা ভোটপর্বের শেষেও মোদী যদি এরকম ভবিষ্যদ্বাণী করেন, তাহলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কারণ মোদী সরকারের হাতে যে সংখ্যা আছে, তাতে হাসতে-হাসতে অনাস্থা ভোটে জিতে যাবে। এক ফোঁটাও ঘাম ঝরাতে হবে না। যে বিষয়টি বিরোধী নেতারাও খুব ভালোভাবে জানেন। তাঁরা যে হারবেন, তা কার্যত স্বীকারও করে নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, মোদী যাতে সংসদে এসে মণিপুর নিয়ে মুখ খোলেন, সেজন্য অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিরোধীদের সেই চাল না হিতে বিপরীত হয়। কারণ সেক্ষেত্রে মোদী সরকার প্রচার করতে পারবে যে তাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি বিরোধী জোট।