হজরত মহম্মদ বিতর্কে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। তা নিয়ে পালটা ইসলামাবাদকে তোপ দাগল ভারত। স্পষ্টভাষায় নয়াদিল্লি কার্যত জানিয়ে দিল, যে দেশ নিজেদের সংখ্যালঘু মানুষকে রক্ষা করতে পারে না, সেই দেশ আবার ভারতের বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে এবং মন্তব্য আসছে, তা আমরা দেখেছি। অন্য দেশ কীভাবে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আচরণ করছে, তা নিয়ে লাগাতার সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘনকারী কোনও দেশের মন্তব্য যে কতটা অযৌক্তিক, সেটা কারও কাছে অস্পষ্ট নয়। হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান এনং আমদিয়া-সহ সংখ্যালঘুদের উপর যে ধারাবাহিক হত্যালীলা চালাচ্ছে পাকিস্তান, তা দেখে আসছে বিশ্ব।’
হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পশ্চিম এশিয়ার ইসলামিক দেশগুলি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সেই পরিস্থিতিতে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে পাকিস্তান। নয়া প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ টুইটারে বলেন, 'আমাদের প্রিয় পয়গম্বরের বিরুদ্ধে ভারতের বিজেপি নেতা যে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন, তার তীব্র নিন্দা করছি। আগেও একাধিকবার বলেছি যে (নরেন্দ্র) মোদীর আমলে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা পদদলিত হচ্ছে এবং মুসলিমদের হত্যা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত বিশ্বের এবং ভারতকে শাস্তি দেওয়া উচিত।'
সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। ভারতের সাউথ ব্লকের তরফে বলা হয়েছে, ‘সমস্ত ধর্মের প্রতি ভারত সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান আছে। সেটা পাকিস্তানের মতো নয়। যেখানে ধর্মান্ধদের প্রশংসা করা হয় এবং তাঁদের সম্মানে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়।’
কী হয়েছিল ঘটনাটি?
সম্প্রতি একটি তথ্যযাচাইকারী ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবায়ের বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার একটি ভিডিয়ো টুইট করেছিলেন। জ্ঞানবাপী মসজিদ সংক্রান্ত একটি আলোচনাসভায় নূপুর বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বলে দাবি করা হয়। সেই ঘটনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। সেই মন্তব্য নিয়ে সরব হয় পশ্চিম এশিয়ার একাধিক মহলও।
আরও পড়ুন: হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জের, কাতারের পর ভারতীয় দূতকে তলব ইরান, কুয়েত, সৌদির
সেই পরিস্থিতিতে রবিবার নূপুরকে সাসপেন্ড করে দেয় বিজেপি। সেই ঘটনায় নাম উঠে আসা অপর বিজেপি মুখপাত্র নবীনকুমার জিন্দলকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়। সেই প্রেক্ষিতে নূপুর ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন জিন্দল। তারইমধ্যে কাতারের তরফে ভারতীয় দূতকে তলব করা হয়। পরেই একইপথে হাঁটে কুয়েতের মতো দেশ। যদিও ভারতও স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে, তা নয়াদিল্লির অবস্থান নয়।