করোনা অতিমারীর জেরে বর্তমানে বাড়ি থেকেই নিরাপদে পুজোর আনন্দ উপভোগ করার ওপর জোর দিচ্ছেন সকলে। সে ক্ষেত্রে গণেশ পুজোর জন্য যাতে মূর্তি কিনতে ও বিসর্জন করতেও বাইরে যেতে না-হয়, সেক্ষেত্রেও পদক্ষেপ করেছে নানান সংস্থা। পরিবেশ অনুকূল গণেশ মূর্তি তৈরির জন্য অনলাইন ওয়ার্কশপও করানো হয়েছে। এমনকি মূর্তি তৈরির সামগ্রীও পাঠানো হয়েছে লোকেদের বাড়িতে।
পুণের ক্রিয়েটিভ পর্যাবরণ দক্ষতা কৃতী মঞ্চ নামক একটি সংস্থা এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সংস্থার মাধ্যমে যুব সম্প্রদায়কে ইকো ফ্রেন্ডলি পথে উৎসব পালনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এমনকি বাড়িতে মূর্তি বানানোর জন্য সামগ্রীও পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
জানা গিয়েছে, অতিমারীর জেরে চাকরি হারিয়েছেন এমন ৪০ জন মহিলাকে মূর্তি তৈরির সামগ্রী প্রস্তুত ও একত্রিত করার দায়িত্ব দিয়েছে এই সংস্থা। এই কিটে থাকছে ৮.২ ইঞ্চের গণেশ মূর্তির ছাঁচ, খামারের মাটি, তিনটি রং ও একটি তুলি, বীজ-সহ রেডিমেড মাটির মোদক। শুধু তাই নয়, বাড়িতে বসে মূর্তির তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। উল্লেখ্য, এক মাসের মধ্যে ২৫০০ কিটস বিক্রি করা হয়েছে সংস্থার তরফে।
সংস্থার ডিরেক্টর প্রশান্ত আওয়াচাত জানিয়েছেন, তাঁরা যুক্তি-বুদ্ধির সাহায্যে যুবসমাজের মধ্যে ঐতিহ্য বজায় রেখে উৎসব পালনের সচেতনতা প্রসারের চেষ্টা করছেন। বাড়িতেই পরিবেশ অনুকূল মূর্তি বানিয়ে সকলকে স্বনির্ভর করার প্রচেষ্টাও চালানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কিটগুলি বিতড়ণের আগে সুরক্ষার সমস্ত জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
এই সংস্থা ছাড়াও, চকোলেট ও মাটির গণেশ মূর্তি তৈরির প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন অনেকে। চকোলেটের গণেশ মূর্তির উদ্ভাবক মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজের রিন্টু রাঠোর ১৫ই অগস্ট আন্তর্জাতিক অনলাইন ওয়ার্কশপও করেছিলেন। এই ওয়ার্কশপে চকোলেট ও মাটি দিয়ে কী ভাবে বাড়িতেই গণেশ মূর্তি বানানো যায়, তা শেখানো হয়েছিল। ৪৫টি দেশ থেকে ২৪০০ জন এই ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেন। রাঠোড় জানিয়েছেন, এই প্রথমবার তাঁর ওয়ার্কশপে একদিনে ৯০০ জন রেজিস্ট্রেশন করান।
অন্যদিকে পেশায় বেকার গৌরী কেকরে জানিয়েছেন, দুটি অনলাইন ওয়ার্কশপের মাধ্যমে তিনি বাড়িতেই মূর্তি বিসর্জনের আর্জি জানান। প্রতি বছর হাতে ধরে বাড়িতেই ইকো ফ্রেন্ডলি মূর্তি বানানো প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকলেও, অতিমারীর জেরে এ বছর অনলাইন ক্লাসের পথই বেছে নেন তিনি। রিন্টু জানিয়েছেন, মূর্তি বিসর্জনের জন্য যাতে কাউকে ভিড়ের মধ্যে বেরোতে না-হয়, তাই তিনি মাটি ও চকোলেট দিয়ে বাড়িতেই মূর্তি বানানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। বাড়িতেই বিসর্জন করা যাবে সেই মূর্তি।