শিশুদের বাবা নির্ধারণ করার জন্য দায়রা আদালত ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। হাই কোর্টেও সেই নির্দেশ বহাল ছিল। তবে সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিল, এভাবে শিশুদের ডিএনএ পরীক্ষা তাদের গোপনীয়তার অধিকারকে খর্ব করে। উল্লেখ্য, এক মহিলা আদালতে নিজের স্বামী এবং দেওরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছিলেন। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, তাঁকে তাঁর দেওরের সঙ্গে সহবাস করত বাধ্য করা হত। তাঁর থেকে পণ চেয়ে তাঁর উপর নির্জাতন চালাত শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। এই অভিযোগ প্রমাণ করার জন্যই আদালত তাঁর সন্তানদের ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, আইনত ডিএনএ টেস্ট বৈধ হলেও যখন তখন এভআবে ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া যায় না।
নিম্ন আদালত শিশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে তা এক নির্দিষ্ট হাসপাতালে জমা দিতে বলেছিল ডিএনএ পরীক্ষার জন্য। এই নির্দেশের বিরোধিতায় শীর্ষ আদালতে গিয়েছিলেন অভিযুক্তরা। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। সেই সময় শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, ‘কোনও কিছু বৈধ বলেই তার নির্দেশ দেওয়া যায় না। বিশেষ করে যেখানে সেই নির্দেশের কারণে অন্য কোনও ব্যক্তির শরীরের উপর প্রভাব পড়ছে। এই নির্দেশে গোপনীয়তার অধিকার খর্ব হচ্ছে।’
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, যে দুই শিশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা কেউই এই মামলার কোনও পার্টি নয়। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই পরীক্ষার ফলাফলের কারণে শিশুদের ‘বৈধতা’ উঠতে পারে। পরবর্তীতে এর কারণে তাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়েও সমস্যা হতে পারে। শীর্ষ আদালত আরও বলে, এই মামলায় শিশুদের পিতৃ পরিচয় প্রশ্নের মুখে নেই। পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, শিশুরা কোনও ‘বস্তু’ নয় যে তাদের পরীক্ষাগারে টেস্টের জন্য পাঠানো হবে।