'তালাক-ই-হাসান' এবং মুসলিমদের সব ধরনের ‘একতরফা বিচারবহির্ভূত বিবাহবিচ্ছেদ’কে অসাংবিধানিক ঘোষণা করার দাবিতে করা আবেদনগুলি গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, তালাক-ই-হাসান প্রথায় তিনমাস যাবৎ প্রতিমাসে একবার করে ‘তালাক’ উচ্চারণ করতে হয় বিবাহবিচ্ছেদের জন্য। স্ত্রীর মতামত ছাড়াই স্বামী এই প্রথায় বিবাহ বিচ্ছেদ করতে পারে। মুসলিম সমাজে এই ধরনের আরও প্রথা রয়েছে বিবাহ বিচ্ছেদের। সেগুলিকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়ার আবেদন করা হয়।
বিচারপতি এসকে কাউলের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির সুপ্রিম বেঞ্চ এই আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্র, জাতীয় মহিলা কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং অন্যান্য জড়িত পার্টিকে চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে বলেছে। মঙ্গলবার মুসলিমদের তালাক প্রথার বিরোধিতায় করা তিনটি পৃথক আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি হয়। মামলাকারীদের দাবি, বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত ধর্ম এবং লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইন জারি করা উচিত সরকারের।
এর আগে গত সপ্তাহে শীর্ষ আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করে কর্ণাটকের চিকিৎসক সৈয়দা আমব্রিন দাবি করেছিলেন, যে তালাক-ই-কিনায়া এবং তালাক-ই-বাইন স্বেচ্ছাচারী, অযৌক্তিক। এই প্রথায় সমতা, বৈষম্যহীন জীবন এবং ধর্ম পালনের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার খর্ব হয়। বিচারপতি এসএ নাজির এবং জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয় সোমবার। এর প্রেক্ষিতে বেঞ্চের তরফে আইন ও বিচার মন্ত্রক, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক এবং অন্যান্য মন্ত্রককে নোটিশ জারি করে সরকারের মতামত জানতে চাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ভারতের মুসলিম ব্যক্তিগত আইন বিবাহকে একটি চুক্তি হিসাবে বিবেচনা করে। এর আওতায় বেশ কয়েকটি বৈধ বিবাহবিচ্ছেদের পদ্ধতি রয়েছে। এমনকি পুরুষদের মৌখিকভাবে তালাকের বিষয়টি অনুমোদিত এর অধীনে। যদিও ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক প্রথাকে বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয়। তিন তালাক প্রথাকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দেয়। শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নং অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করে তিন তালাক। এবার শীর্ষ আদালতে তালাক-ই-কিনায়া এবং তালাক-ই-বাইনের পাশাপাশি তালাক-ই-হাসান প্রথাকেও চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করা হল।