দু'বছর আগেই চালু হয়ে গিয়েছে নয়া কর কাঠামো। কিন্তু তাতে তেমন সাড়া মিলছে না। বরং পুরনো কাঠামোর আওতায় থাকতে চাইছেন অধিকাংশ করদাতা। সেই পরিস্থিতিতে পুরনো কর কাঠামোর পরিবর্তে নয়া কর কাঠামোর আওতায় আসার জন্য করদাতাদের বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দিতে পারে কেন্দ্র। দুই আধিকারিককে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে ‘লাইভ মিন্ট’।
নাম গোপন রাখার শর্তে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ গ্রুপের ‘লাইভ মিন্ট’-এ বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত ওই দুই আধিকারিক জানিয়েছেন, আপাতত বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। পুরনো এবং কঠিন কর কাঠামোর পরিবর্তে মানুষ যাতে নয়া কাঠামোর মাধ্যমে আয়কর দেন, সেজন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধা বা ‘ইনসেনটিভ’ দেওয়া হতে পারে।
এমনিতে ২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে নয়া কর কাঠামো কার্যকর হয়েছে। সেই নয়া কর কাঠামোয় ২.৫ লাখ টাকার নীচে বার্ষিক আয় হলে কর দিতে হয় না। ২.৫ লাখ টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকার কম পর্যন্ত দিতে হয় পাঁচ শতাংশ কর। তবে আয়কর রিটার্ন ফাইল করলে সেই করের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে পাঁচ লাখ টাকা থেকে ৭.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ, ৭.৫ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, ১০ লাখ টাকা থেকে ১২.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ এবং ১৫ লাখের বেশি হলে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। নয়া কর কাঠামোয় কার্যত কোনও করছাড় (প্রভিডেন্ট ফান্ড, গৃহঋণ, জীবনবিমা, স্বাস্থ্যবিমার মতো বিষয়) পাওয়া যায় না। মেলে না হাউজ রেন্ট অ্যালোয়েন্স বাবদ ছাড়ও। যা পুরনো কর কাঠামোয় পাওয়া যায়। তার ফলে যে টাকার কর দিতে হয়, সেটা অনেকটাই কমে যায়। সেই পরিস্থিতিতে নয়া কাঠামোয় করের হার কমানো হলেও (ক্ষেত্রবিশেষে কমেছে) পুরনো কর কাঠামোর আওতায় থাকতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন করদাতারা।
কর বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিমার প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধি, পৃথক সামাজিক সুরক্ষা প্রক্রিয়ার অভাবের মতো বিষয়গুলির জন্য মানুষের মনে নয়া কর কাঠামো তেমন দাগ কাটতে পারেননি। ডেয়লেট ইন্ডিয়ার বিশেষজ্ঞ তপতী ঘোষ বলেন, ‘আমি যতটা বুঝেছি, তাতে নয়া কর কাঠামো তেমন সাড়া পায়নি। সেটার অনেকগুলি কারণ হতে পারে।' তাঁর মতে, কম আয়ের ক্ষেত্রে করের হার কমানো হয়েছে। কিন্তু করছাড়, হাউজ রেন্ট অ্যালোয়েন্স ছাড় না পাওয়ার জন্য (করদাতারা) করের হার কম হওয়ায় কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না মানুষ। আবার যাঁদের বার্ষিক আয় আবার ১৫ লাখ টাকার বেশি, তাঁদের তো ৩০ শতাংশ হারেই কর দিতে হচ্ছে।