একদিকে পশ্চিমবাংলা, অন্যদিকে অসম। এই দুই রাজ্যে গজরাজের হানায় মৃত্যু অব্যহত রয়েছে। অসমে ফের হাতির হানায় মৃত্যু হল দুজনের। শুক্রবার নিম্ন অসমের ইন্দো–ভুটান সীমান্তের কাছে তামুলপুর এলাকায় দুই ব্যক্তিকে পায়ে করে পিষে মারল হাতি। এর ফলে শুধুমাত্র নভেম্বর থেকেই অসমে হাতির হানায় মোট ১২ জনের মৃত্যু হল। বারবার হাতির হামলার ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা। একইসঙ্গে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। মৃতদের নাম হল অজয় মিনসে এবং রাজেশ তিরকি। দুজনেরই বয়স ৩০ বছর।
আরও পড়ুন: শুঁড়ে করে তুলে আছাড় হাতির, মৃত্যু রাজমিস্ত্রির, ২০২৩-তে বাগডোগরায় মৃত ৯
জানা গিয়েছে, শুক্রবার প্রায় ৬টি হাতির একটি দল জঙ্গল থেকে বক্সা জেলার লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল। সেই সময় ওই দুজনে জঙ্গলের কাছে গবাদি পশু চরাচ্ছিলেন। তারা হাতি দেখতে পেয়ে নিজেদের বাঁচাতে পালানোর চেষ্টা করেন। পালটা হাতির দল তাদের তাড়া করে। পরে তাদের পায়ের তলায় পিষে মারে। দুজনেই নিম্ন অসমের বক্সা জেলার তামুলপুর শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দেওসুঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। এই গ্রামটি ভুটান সীমান্ত থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমেছে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার তাদের দেহের ময়নাতদন্ত করার পর পরিবারের কাছে দেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মে থেকে অক্টোবরের মধ্যে ওই এলাকায় গজরজের হামলায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ফলে এবার তা বেড়ে হল ৫ জন।
বন বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে বন কর্মীরা ৬ টি হাতির একটি দল দেখতে পেয়েছেন। বন বিভাগের অনুমান, বক্সা জেলার ওই অংশে ৬০ থেকে ৮০টি হাতির একটি বড়দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওই ৬টি হাতি ওই দলেরই অংশ। প্রসঙ্গত, বারবার লোকালয়ে হাতি চলে আসা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে বনদফতরের তরফে বলা হয়ে থাকে খাবারের খোঁজে হাতি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে। সেক্ষেত্রে শুধুই কী এই কারণটি রয়েছে, নাকি আরও অন্য কোন কারণ রয়েছে? সে প্রসঙ্গে অসম এলিফ্যান্ট ফাউন্ডেশনের সিইও কৌশিক বড়ুয়া জানান, অসমে এই বেড়ে চলা মানুষ ও হাতির সংঘর্ষের জন্য খাদ্য সবসময় কারণ নয়। প্রতিনিয়ত নির্মাণকাজ এবং বাসস্থান বৃদ্ধির ফলে জঙ্গল কমে যাচ্ছে। সেই কারণে হাতির হামলা বাড়ছে।