সিনেমায় এমন হয়। তবে বাস্তবে মানবিকতা ও প্রেমের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন প্রতাপগড়ের অবধেশ। দুর্ঘটনায় প্রায় পঙ্গু হবু স্ত্রী আরতির পাশে দাঁড়ালেন তিনি।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় প্রতাপগড়ের কুন্ডায় বিয়ের ঠিক ৮ ঘণ্টা আগে নিজের বাড়িতে বড়সড় দুর্ঘটনার মুখে পড়েন আরতি। সিড়ি দিয়ে নামার সময় এক শিসুকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি পা পিছলে পড়ে সিঁড়ির নীচে গিয়ে পড়েন।
দুর্ঘটনার জেরে তাঁর মেরুদণ্ডের একাধিক জায়গায় হাড় ভাঙে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে প্রয়াগরাজের একত বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসক জানান, আগামী বেশ কয়েক মাস আরতিকে শয্যাশায়ী থাকতে হবে। এমনকি, তিনি সারা জীবনের মতো পঙ্গুও হয়ে যেতে পারেন।
চিকিৎকের কথা শোনার পরে প্রমাদ গোনেন আরতির পরিবার। তাঁর বাবা পাত্রপক্ষ পরিবারের কাছে জানতে চান, এর পরেও কি তাঁরা তাঁর মেয়েকে বধূ হিসেবে গ্রহণ করবেন? অন্যথায় আরতির ছোটবোনের সঙ্গে পাত্র অবধেশের বিয়ের প্রস্তাবও তিনি দেন।
ঠিক এই সংকটের সময় এগিয়ে আসেন অবধেশ স্বয়ং। দুই পরিবারকে হতবাক করে তিনি ঘোষণা করেন, নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট লগ্নে আরতিকেই তিনি বিয়ে করবেন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, আরতির চিকিৎসার সমস্ত ভার তিনিই বহন করবেন।
অবধেশকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁর পরিবার। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন যুবক। চিকিৎসকদের জানিয়ে দুই ঘণ্টার জন্য আরতিকে স্ট্রেচারে তুলে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। যথাসময়ে সমস্ত রীতি মেনেই সম্পন্ন হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ে শেষ হতেই আরতিকে দ্রুত হাসপাতালে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়।
গত বুধবার আরতির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। স্বামী হিসেবে সব নথিপত্রে সই করেন অবধেশ। এক আত্মীয় জানিয়েছেন, ‘বিয়ের পর থেকে অবধেশ হাসপাতাল ছাড়েননি এবং আরতির সব রকম যত্ন নিচ্ছেন। ঘটনায় দুই পরিবারই বিহ্বল হয়ে পড়েছেন এবং সকলে মেয়েটির দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।’