হরিয়ানার নুহ এবং আশেপাশের গুরুগ্রাম হিংসার বিষয়টি নজরে এসেছে আমেরেকিরা। এই নিয়ে গতকালই মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার জবাবও দেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছরে ফুলে ফেঁপে উঠেছে গুরুগ্রাম। বহু বহুজাতিক সংস্থার অফিস আছে সেখানে। এই আবহে অনেক বিদেশিও সেখানে থাকেই। এই পরিস্থিতিতে গুরুগ্রামের হিংসা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শান্তি ফেরানোর বার্তা দেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের আধিকারিক।
ম্যাথু মিলার বলেন, 'হিংসার যে ঘটনা ঘটেছে, তার প্রেক্ষিতে বলব, সব সময়ের মতোই আমেরিকা চায় যে উভয় পক্ষই হিংসা থেকে বিরত থাকুক। আমরা শান্তি ফেরার পক্ষে। কোনও পক্ষই যেন আর হিংসার আশ্রয় না নেয়, সেটাই আমাদের কামনা।' এদিকে গুরুগ্রাম হিংসায় কোনও মার্কিন নাগরিকের ওপর প্রভাব পড়েছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার জানান, কোনও মার্কিন নাগরিকের ওপর হামলার বিষয়ে আমরা অবগত নই। তবে এই বিষয়ে দিল্লিতে অবস্থিত আমাদের দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলব।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই একটি ধর্মীয় মিছিলকে আটকানোর অভিযোগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় হরিয়ানার নুহ এবং গুরুগ্রাম জেলায়। উল্লেখ্য, হরিয়ানার বজরং দল কর্মী মনু মানেসারকে কেন্দ্র করেই সেখানের নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায় গতকাল হিংসা ছড়ায়। গত ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম যুবককে খুন করার ঘটনায় মনু পলাতক। সেই মনু ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেছিল এই ধর্মীয় মিছিলে সে থাকবে। এই আবহে গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়িকে লক্ষ্য পাথর ছোঁড়া হয়। সেই সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ মানুষ।
সেদিন সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রাম সোহনা হাইওয়েতে হিংসা ছড়াতে থাকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইট বৃষ্টি। হিংসার ঘটনায় দুই হোমগার্ড সহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু ঘটেছে। মৃত হোমগার্ডদের নাম - নীরজ এবং গুরুসেবক। ঘটনায় জখম আরও অন্তত ২০০ জন। পরে অন্যত্র হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। এখনও পর্যন্ত সেরাজ্যে হিংসার বলি মোট ৬। এরই মাঝে সর্বত্র সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মোহরলাল খট্টর। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গুজব এবং প্ররোচনা ঠেকাতে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী।