আলাস্কা এয়ারের দুর্ঘটনায় নিজেদের দায় স্বীকার করে নিলেন বোয়িংয়ের সিইও ডেভ ক্যালহুন। এদিকে দুর্ঘটনার কবলে পড়া বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স নিয়ে সংশয় দেখা দিতেই এই মডেলের সব বিমানকেই বসিয়ে দেওয়া হয়েছে আমেরিকায়। এই আবহে মুখ খুললেন বোয়িংয়ের সিইও।
1/6 আলাস্কা এয়ারলাইন্সের দুর্ঘটনার পরপরই বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স বিমানের পরীক্ষা ও পরিদর্শনে নেমেছিল আমেরিকার আরও এক উড়ান সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স। পরীক্ষার সময় তারা জানায়, বিমানে ঢিলে হয়ে যাওয়া স্ক্রু খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, বিমানগুলো পুনরায় চলাচলের উপযোগী করার আগে এর দরজার প্লাগ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। এই আবহে মার্কিন কর্তৃপক্ষও কড়া পদক্ষেপ করে। এ সবের মাঝে নিজেদের ভুল স্বীকার করল বোয়িং।
2/6 এই আবহে আলাস্কা এয়ারের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বোয়িং সিইও বলেন, 'এই ঘটনার কথা জানতে পেরে আমার হাড়হিম অবস্থা হয়ে গিয়েছে। আমরা এই সমস্যা নিয়ে আগে ভাবব। আমরা আমাদের ভুল স্বীকার করব। এরপর ১০০ শতাংশ স্বচ্ছতা দিয়ে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ করব এই সমস্যা মেটাতে।' এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, নিজেদের কর্মচারীদের বোয়িং জানিয়েছে, এই সমস্যা আদতে 'গুণগত মান রক্ষার' সমস্যা।
3/6 বোয়িং নিজেদের সকল কারখানা এবং মাল সরবরাহকারী সংস্থাকে চিঠি লিখেছে এই আবহে। গোটা ব্যবস্থা, পণ্য, এবং প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংস্থার তরফ থেকে। এই আবহে নিজের সংস্থার কর্মীদের বোয়িং সিইও বলেছেন, 'এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আমাদের কারখানা থেকে বেরিয়ে আর যে সব বিমান আকাশে উড়বে, সেগুলি যেন সত্যিকার অর্থেই নিরাপদ হয়।' এদিকে এফএএ-র নির্দেশের আগেই আলাস্কা এবং ইউনাইটেড এয়ার বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স বসিয়ে দেয়। উড়ান সংস্থার এই সিদ্ধান্তকে সাহসী আখ্যা দিয়ে প্রশংসা করেন বোয়িং কর্তা।
4/6 এর আগে গত ৬ জানুয়ারি মাঝ আকাশেই বোয়িং ৭৩৭-৯ বিমানের জানলা সব একটা বড় অংশ ভেঙে গিয়ে 'উড়ে যায়'। রিপোর্ট অনুযায়ী, অরেগনের পোর্টল্যান্ড থেকে বিমানটি টেকঅফ করার কিছু পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানটি ক্যালিফোর্নিয়ার ওন্টারিওতে যাচ্ছিল। তবে দুর্ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে বিমানচালক ফেরার পথ ধরেন। জরুরি অবস্থায় বিমানটিকে অবতরণ করানো হয় পোর্টল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিমানে ১৭৪ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু ছিলেন। বিমানে থাকা ১৮০ জনের মধ্যে কেউই আহত হননি বলে জানা যায়।
5/6 জানা গিয়েছে, বিমানটি যখন ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল, তখন আচমকাই একটি জানলা ভেঙে যায়। এরপর কেবিন প্রেসার কমে যায়। এরপরই বিমানের একটা বড় অংশ আকাশে উড়ে যায়। বিমানযাত্রীরা এক বিকট আওয়াজ শুনতে পান। যে জানলাটি ভেঙে উড়ে যায়, তার পাশেই বসে ছিল এক শিশু। হাওয়ার টানে তার জামা ছিঁড়ে যায়। ঘটনার সময় অনেক যাত্রীর হাতেই ফোন ছিল। সেই ফোনও উড়ে চলে যায় বিনানের ভাঙা অংশ দিয়ে। হাওয়ার টানে বিমানের ভাঙা অংশের পাশের একটি আস্ত আসনও উড়ে চলে যায়।
6/6 উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বরেই বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স বিমানকে বাণিজ্যিক উড়ানে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল মার্কিন এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। আর এরই মধ্যে এই বিমানে ঘটে গিয়েছে এমন ভয়াবহ ঘটনা। এর জেরে বিমানযাত্রীদের প্রাণও যেতে পারত। এদিকে কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। উল্লেখ্য, বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের বিমান গত ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ভয়াবহ দু'টি দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল। এর জেরে মোট ৩৪৬ জন যাত্রীর মৃত্যু ঘটেছিল। এরপর বহু দেশে এই বিমানটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।