হেডিংলে টেস্টে দুই দলের বোলাররাই খেলার নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে। অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা যদি ডালে ডালে চলে, তবে পাতায় পাতায় চলছে ইংল্যান্ডের বোলাররা। যে কারণে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনে পড়েছে ১৩ উইকেট। আর দ্বিতীয় দিনে পড়ল ১১ উইকেট। আর বোলারদের তাণ্ডবের হাত ধরেই নজির গড়ে ফেললেন মইন আলি। তিনি টেস্টে ক্রিকেটে ২০০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড করে ফেললেন।
অজিরা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামলে বল হাতে জ্বলে ওঠেন মইন। তিনি প্রথমে মার্নাস ল্যাবুশেনকে ফেরান। তার পর তিনি স্টিভ স্মিথকে আউট করেন। আর এই দুই উইকেটের হাত ধরেই টেস্ট ক্রিকেটে মইন ২০০ উইকেটের মাইলস্টোনে পৌঁছে গেলেন। ব্রিটিশ তারকা ৬৬টি টেস্টে ১১৬ ইনিংস খেলে ৩৭.০৬ গড়ে এবং ৩.৬৩ ইকোনমিতে ২০০ উইকেট নিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি ইংল্যান্ডের তৃতীয় স্পিনার হিসেবে ২০০ উইকেটের মাইলস্টোন স্পর্শ করলেন। শুধুমাত্র প্রাক্তন দুই ব্রিটিশ স্পিনার গ্রেম সোয়ান (২৫৫) এবং ডেরেক আন্ডারউড (২৯৭) তাঁর আগে রয়েছেন।
ব্রিটিশ প্লেয়ার এখনও যাঁরা খেলছেন, তাঁদের মধ্যে মইনের উইকেট তৃতীয়-সর্বোচ্চ সংখ্যক। তিনি জেমস অ্যান্ডারসন (৬৮৮), স্টুয়ার্ট ব্রডের (৫৯৬) পিছনেই রয়েছেন। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস ১৯৭টি উইকেট নিয়ে মইনের পিছনে রয়েছেন। ১৬তম ব্রিটিশ বোলার হিসেবে ২০০ উইকেট নেওয়ার নজির গড়েছেন মইন।
আরও পড়ুন: শেষ বারের মতো ধোনিকে টুইটারে জন্মদিনের শুভেচ্ছা- কেন এমন বললেন অশ্বিন?
মইনের দাপটে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে চার উইকেট হারিয়ে বসে বসে রয়েছে। স্মিথ, ল্যাবুশেন ছাড়াও সাজঘরে ফিরে গিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার এবং উসমান খোয়াজা। মইনের ২ উইকেট ছাড়াও ১টি করে উইকেট নিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড এবং ক্রিস ওকস। দ্বিতীয় দিনের শেষে অজিদের স্কোর ৪ উইকেটে ১১৬ রান।
অ্যাশেজে পরপর দুই টেস্ট হেরেও ব্রিটিশ ব্যাটারদের হাল তথৈবচ। তবে তৃতীয় টেস্টে লড়াই করছেন ব্রিটিশ বোলাররাই। প্রথম ইনিংসে বিধ্বংসী ছন্দে তাঁরা অস্ট্রেলিয়াকে গুটিয়ে দিয়েছিলেন মাত্র ২৬৩ রানে। মার্ক উড, ক্রিস ওকস, স্টুয়ার্ড ব্রডেরা প্রথম দিনেই একেবারে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন অজি ব্যাটিং অর্ডারে। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটাররা অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলতে ব্যর্থ হন। বরং প্যাট কামিন্সের দাপটে ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় মাত্র ২৩৭ রানে। ২৬ রানের লিড পায় অজিরা।
প্রথম দিনের শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ৬৮ রানে ৩ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন জো রুট (১৯) এবং জনি বেয়ারস্টো (১)। দ্বিতীয় দিনের প্রথম ওভারেই জো রুটকে আউট করে শুক্রবার শুরুটা দুরন্ত করেন প্যাট কামিন্স। দ্বিতীয় দিনের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই রুটকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে অক্সিজেন দেন কামিন্স। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে আউট হন রুট। প্রথম স্লিপে ডেভিড ওয়ার্নার ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি। ১৯ রানেই সাজঘরে ফেরেন রুট।
আরও পড়ুন: থিকসানার আগুনে বোলিং, পাথুম-করুণারত্নের ঝড়, উইন্ডিজকে গোহারান হারাল শ্রীলঙ্কা
এর পর অধিনায়ক বেন স্টোকস ছাড়া কেউই সে ভাবে ক্রিজে টিকতে পারেননি। ১০৮ বলে ৮০ রান করেন স্টোকস। বাকিরা অবস্থা পুরো ল্য়াজেগোবরে হয়। শুক্রবার ইংল্যান্ডের কোনও ব্যাটার ২৫ রানেই পৌঁছাননি। জ্যাক ক্রলি বৃহস্পতিবার ৩৩ রান করে আউট হয়েছিলেন। এটা ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর মার্ক উডের। ২৪ রান করেছেন তিনি। ২১ রান করেছেন মইন আলি। আর বাকিরা গড়াগড়ি খেয়েছেন।
অজিদের হয়ে প্যাট কামিন্স একাই ৬ উইকেট নিয়েছেন। বেন ডাকেট, হ্যারি ব্রুক, জো রুট, মইন আলি, মার্ক উড, স্টুয়ার্ড ব্রডের উইকেট নিয়েছেন কামিন্স। এছাড়া মিচেল স্টার্ক নিয়েছেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল মার্শ এবং টড মারফি।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়াও নড়বড় করছে। ওপেন করতে নেমে ফের ব্যর্থ হন ওয়ার্নার। ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আর এক ওপেনাক খোয়াজা ৯৬ বলে ৪৩ করেন। তিনে নেমে ল্যাবুশেন ৭৭ বলে ৩৩ রান করেন। স্টিভ স্মিথ তাঁর ১০০তম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হন। ৯ বলে ২ করে আউট হন তিনি। প্রথম ইনিংসে তিনি ২২ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় দিনের শেষে ক্রিজে রয়েছেন ট্রেভিস হেড এবং মিচেল মার্শ। ট্রেভিস হেড ৫২ বলে ১৮ করে অপরাজিত রয়েছেন। মার্শ অপরাজিত রয়েছেন ৪৩ বলে ১৭ রান।প্রথম দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ১৪২ রানে এগিয়ে রয়েছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।