ম্যাচ জিতেও নিশ্চিত হয়নি নক-আউটের টিকিট। উরুগুয়ে একটা গোল দিলেই ভেঙে যেত সব স্বপ্ন। সেই টানটান উত্তেজনার মধ্যে যে ছয় মিনিট কাটাতে হয়েছে, তা জীবনের দীর্ঘতম ছয় মিনিট বলে জানালেন দক্ষিণ কোরিয়ার অধিনায়ক সন হিউং-মিন।
শুক্রবার পর্তুগালের বিরুদ্ধে ম্যাচ শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে গোল খেয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। ২৭ মিনিটে গোল শোধ করেন সনরা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের শেষেও খেলার ফল ছিল ১-১। ওই ফলে ম্যাচটা শেষ হলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেত দক্ষিণ কোরিয়া। কারণ গ্রুপ 'এইচ'-র অন্য ম্যাচে উরুগুয়ে ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল (সেভাবেই খেলা শেষ হবে উরুগুয়ে পয়েন্ট চার হত, দক্ষিণ কোরিয়ার দুই)।
কিন্তু বড় সুযোগ ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার হাতে। আর এক গোল দিতে পারলেই নক-আউট কার্যত নিশ্চিত হয়ে যেত। ৯১ মিনিটে ঠিক সেটাই করেন সনরা। যে গোলের সৌজন্যে ২-১ গোলে জিতে যায় দক্ষিণ কোরিয়া (পয়েন্ট দাঁড়ায় চার)। কিন্তু তখনও উরুগুয়ে-ঘানা ম্যাচ শেষ হয়নি। ওই সময় যদি উরুগুয়ে আর গোল করতে না পারত, তাহলেই দক্ষিণ কোরিয়ার নক-আউট নিশ্চিত হত। শেষপর্যন্ত সেটাই হয়। পর্তুগালের সঙ্গে গ্রুপ ‘এইচ’ থেকে নক-আউটে উঠে যায় দক্ষিণ কোরিয়া।
আর যে সময়টা হাপিত্যেশ করে বসতে থাকতে হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়াকে, সেটা তাঁর জীবনের দীর্ঘতম ছয় মিনিট ছিল বলে জানিয়েছেন সন। যিনি এই প্রথম বিশ্বকাপের নক-আউট পর্যায়ে খেলতে চলেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার অধিনায়ক বলেন, 'ওটা আমার জীবনের দীর্ঘতম ছয় মিনিট ছিল। কিন্তু হার্ডলে আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক ছিলাম। আমি বলেছিলাম যে উরুগুয়ে যদি আরও একটি গোল করেও দেয়, তাহলে আমি দলকে নিয়ে গর্বিত। তোমরা নিজেদের সবকিছু উজাড় করে দিয়েছ। এবার দেখা যাক কী হয়।'
অধিনায়ক বললেও দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়রা যে আরও একটা হৃদয়ভঙ্গ সইতে পারবেন না, তা বোঝাই যাচ্ছিল। তাঁরা অধীর আগ্রহে ঘানা-উরুগুয়ে ম্যাচের শেষ বাঁশির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আর সেটা বাজার পরেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়রা। মাঠের ঠিক মাঝখানেই তাঁরা হার্ডল করে দাঁড়িয়েছিলেন। সেখানেই আনন্দে লাফাতে থাকেন তাঁরা। যে ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গতবার বিশ্বকাপে গ্রুপের শেষ তৎকালীন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে দিয়েছিল কোরিয়া। ২-০ গোলে জিতেছিলেন সনরা। কিন্তু গ্রুপের অন্য ম্যাচে সুইডেনের কাছে মেক্সিকো ৩-০ গোলে হেরে যাওয়ায় বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল কোরিয়া। নক-আউটে উঠে গিয়েছিল সুইডেন এবং মেক্সিকো। রাশিয়ায় কোরিয়ার সেই বেদনা ভুলিয়ে দিয়েছে কাতার।