গুজরাট টাইটানস তখন ব্যাট করছে। নবম ওভারে বল করছিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের ক্রুনাল পাণ্ডিয়া। তাঁকে শেষ বলে চার মারেন ভাই হার্দিক পাণ্ডিয়া। এর পর ১১তম ওভারে বল করতে এসেই হার্দিককে সাজঘরে ফেরান ক্রুনাল। তাও একেবারে প্রথম বলে। পারিবারিক যুদ্ধ ছাড়া একে আর কী বলা যায়!
তবে ম্যাচ জিতে যাওয়ায়, ক্রুনালের বলে আউট হয়ে কোনও আফসোস নেই ভাইয়ের। বরং হার্দিক খুশি। ম্যাচের পর তিনি মজা করে বলেছেন, ‘ক্রুনাল আমাকে আউট করেছে, আর আমরা ম্যাচটা জিতেছি। তাই এতে পরিবার খুশি।’ প্রসঙ্গত হার্দিককে আউট করে সেলিব্রেট করেননি দাদা ক্রুনাল।
এ দিন টসে জিতে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন গুজরাট টাইটানসের অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া। শুরুতেই ব্যাট করতে নেমে বড় ধাক্কা খান লখনউ অধিনায়ক। ম্যাচের প্রথম বলেই শূন্য করে আউট হন কেএল রাহুল। তাঁকে ফেরান জাতীয় দলে তাঁরই সতীর্থ মহম্মদ শামি।
মহম্মদ শামি এ দিন শুরু থেকেই একেবারে আগুনে মেজাজে ধরা দিয়েছেন। ৫ ওভারের মধ্যে এ দিন গুজরাটের ৪ উইকেট পড়ে যায়। তার মধ্যে মহম্মদ শামি একাই নেন ৩ উইকেট। বাকি ১টি উইকেট নিয়েছেন বরুণ অ্যারন। রাহুল ছাড়াও কুইন্ট ডি'কক-কে (৯ বলে ৭ রান) বোল্ড করেন শামি। এর পর শামির বলেই ৫ বলে ৬ করে বোল্ড হন মণীশ পাণ্ডেও। এভিন লুইস ৯ বলে ১০ রান করে বরুণ অ্যারনের বলে শুভমন গিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। পাওয়ার প্লে-তেই ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতে চাপে পড়ে যায় লখনউ। প্রসঙ্গত দুরন্ত পারফরম্যান্স করে ম্যাচের সেরাও হয়েছেন শামি।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে লখনউ জায়ান্টসের হাল ধরেন দীপক হুডা এবং ২২ বছরের তরুণ বাদোনি। আয়ুশ বাদোনির এই ম্যাচেই অভিষেক হয়। এই জুটি পঞ্চম উইকেটে ৮৭ রান যোগ করেন। দীপক হুডা ৪১ বলে ৫৫ করে আউট হন। তাঁকে ফেরান রশিদ খান। বাদোনিকে ফেরান বরুণ অ্যারন। তিনি আবার ৪১ বলে ৫৪ করেছেন। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ক্রুনাল পাণ্ডিয়া করেন ১৩ বলে ২১ রান। লখনউ সুপার জায়েন্টস শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৫৮ রান করে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় গুজরাট টাইটানস। মাত্র ৩ বল খেলে শূন্যতে আউট হন শুভমন গিল। তাঁকে ফেরান দুষমন্ত চামেরা। এর পরেই চামেরার বলে মাত্র ৬ রান করে আউট হন বিজয় শঙ্করও। দলের ১৫ রানের মাথায় ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় গুজরাট। কিন্তু এর পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ম্যাথু ওয়েড এবং হার্দিক পাণ্ডিয়া। ২৮ বলে ৩৩ রান করে ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার বলে মণিশ পাণ্ডের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন হার্দিক। হার্দিক আউট হওয়ার পরেই ২০ বলে ৩০ করে দীপক হুডার বলে বোল্ড হন ম্যাথু ওয়েডও।
পঞ্চম উইকেটে হাল ধরেছিলেন ডেভিড মিলার এবং রাহুল তেওয়াটিয়া। ২১ বলে ৩০ রান করে আবেশ খানের বলে কেএল রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মিলার। কিন্তু হাল ধরে থাকেন তেওয়াটিয়া। ২৪ বলে অপরাজিত ৪০ রান করে দলকে জয় এনে দেন। ৭ বলে ১৫ রান করে অভিনব মনোহর তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন। ১৯.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬১ রান করে গুজরাট। ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় হার্দিকের টিম।