আট ম্যাচে খেলার পর বাদ পড়েছিলেন ‘রহস্য স্পিনার’ বরুণ চক্রবর্তী। দশম ম্যাচে বাদ পড়লেন ‘অলরাউন্ডার’ বেঙ্কটেশ আইয়ার। সেই অবস্থা দেখে ক্রিকেট মহলের মতে, কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) ম্যানেজমেন্ট কার্যত স্বীকার করে নিল যে রিটেশনের ফাটকা পুরোপুরি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
এবার আইপিএলের মেগা নিলামের আগে বেঙ্কটেশ এবং বরুণকে রিটেনশন তালিকায় রেখে দেয় কেকেআর। গত আইপিএলের দ্বিতীয় পর্যায়ের কয়েকটি ম্যাচের ভিত্তিতে সম্ভাব্য অধিনায়ক শুভমন গিলের পরিবর্তে বেঙ্কটেশকে রিটেন করা হয়। অন্যদিকে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের পরও বরুণকে রিটেন করে কেকেআর। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিনের নাইট সুনীল নারিনের দ্বিগুণ টাকায় বরুণ ও বেঙ্কটেশকে রাখা হয়। যে সিদ্ধান্তকে অনেকেই ফাটকা বলছিলেন।
আরও পড়ুন: IPL Points Table: রাস্তা কঠিন, তবে রাজস্থানকে হারিয়ে লিগ টেবিলে ঘুরে দাঁড়াল KKR
ওই মহলের আশঙ্কা যে ভুল ছিল না, তা আইপিএল শুরুর পর থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। গোড়ার দিকে বরুণ তাও কিছুটা ছন্দে ছিলেন। কিন্তু পঞ্চদশ আইপিএলের সূচনার আগেই যেন ফর্মের সঙ্গে ‘ব্রেকআপ’ হয়ে গিয়েছিল বেঙ্কটেশের। কেকেআরের ভরসার ছিটেফোঁটা মর্যাদা রাখতে পারেননি।
এবারের আইপিএলে বেঙ্কটেশকে বোলিংয়ে ব্যবহার করা হয়নি বেশি। কিন্তু ব্যাটিংয়ে প্রচুর সুযোগ পেয়েছেন। ওপেনিং থেকে ফিনিশার - সবেতেই চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছেন। নয় ম্যাচে করেছেন মাত্র ১৩২ রান। গড় ১৬.৫। সেজন্য অবশ্য অপরাজিত ৫০ রানের একটা ইনিংসকে ধন্যবাদ দিতে পারেন। নাহলে গড় আরও ভয়ংকর হত। স্ট্রাইক রেট ৯৭.৭৭। সেই পরিস্থিতিতে সোমবার রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে বাদ দেওযা হয় বেঙ্কটেশকে। যে দলের বিরুদ্ধে প্রথম লেগের ম্যাচে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য নাম না করে বেঙ্কটেশকে তোপ দেগেছিলেন কেকেআরের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামও।
বেঙ্কটেশের ‘রিটেনড’ সঙ্গী বরুণের উপর খাঁড়া আগেই নেমে এসেছিল। তাঁর চূড়ান্ত ব্যর্থতার কারণে কেকেআরকে কমপক্ষে দুটি ম্যাচে হারতে হয়েছিল। তিনি এবারের আইপিএলে আটটি ম্যাচ খেলেছেন। নিয়েছেন মাত্র চারটি উইকেট। স্ট্রাইক রেট ৪২। গড় ৬১.৭৫। যা রীতিমতো ভয়ংকর। শেষের দিকে এতটাই বাজে বল করেছিলেন যে তাঁকে পুরো চার ওভারও করতে দিচ্ছিলেন না কেকেআর অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। আপাতত যা পরিস্থিতি, তাতে এই মরশুমে সম্ভবত আর প্রথম একাদশে তাঁকে আর দেখাও যাবে না।
আরও পড়ুন: ‘নিজের মর্যাদার জন্য খেলতে চেয়েছিল রিঙ্কু’, ‘ওয়াটার বয়’ নাইটে মুগ্ধ KKR কোচ
সেই পরিস্থিতিতে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, যে চারজনকে রিটেন করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে দু'জন যখন পুরো মরশুমে খেলানোই যাচ্ছে না, তখনই বোঝা যায়, কেকেআরের কৌশল কতটা বাজেভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে। যেটা দল নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যত স্বীকারও করে নিতে বাধ্য হয়েছে কেকেআর। ম্যাককালামও স্বীকার করে নিয়েছেন, ফর্ম এতটাই বাজে ছিল কয়েকজনের যে দলের কম্বিনেশন বারবার পালটাতে বাধ্য হয়েছেন।