তিনি নেমেছিলেন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে। ৭ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলে যাচ্ছিলেন আয়ুশ বাদোনি। নিকোলাস পুরানের সঙ্গে তাঁর পার্টনারশিপই কার্যত জয়ের পথে নিয়ে যায় লখনউ সুপার জায়ান্টসকে। বাদোনির লক্ষ্য ছিল, ম্যাচ জিতিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরা। কিন্তু সে গুড়ে বালি। নিজের ভুলেই ২৪ বলে ৩০ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলে আউট হন বাদোনি। তাও কিনা ছক্কা মেরে ব্যাট নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পেরে হিট উইকেট হন। নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক আউট। তবে এই ভাবে বাদোনি আউট হওয়ায় হতবাক ক্রিকেট মহল। সকলেরই মনে ঘোরাফেরা করছিল একটাই কথা, এ ভাবেও আউট হওয়া যায়!
আরও পড়ুন: শেষ ওভারে পড়ল ২ উইকেট,শেষ বল পর্যন্ত গড়াল উৎকন্ঠা,রোমহর্ষক জয় লখনউয়ের
আরসিবির বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে তখন ২ ওভারে আর মাত্র ১৫ রান বাকি লখনউয়ের। বোলার ওয়েন পার্নেল। পরপর ২টি ওয়াইড করেন তিনি। পরের তিন বলে ওঠে ৬ রান। যার মধ্যে বাদোনির মারা বাউন্ডারিও ছিল। চার মারার পরের বলেই পার্নেলকে স্কুপ করে থার্ড ম্যানের ওপর দিয়ে ছক্কা মারেন বাদোনি। দুরন্ত শট। কিন্তু পার্নেল দেখেন, শট শেষ করার সময় ফলো থ্রুতে বাদোনির ব্যাট স্টাম্পে গিয়ে লেগেছে। ফলে ৬ মারার পরেও আউট হয়ে যান বাদোনি। একেবারে হিট উইকেট। সেই সঙ্গে নিয়ম মতো ছক্কাটিও বাতিল হয়। এ ভাবে আউট হয়ে বাদোনি নিজেও বেশ বিরক্ত। তিনি ব্যাট ফেলে মাথায় হাত দিয়ে কঁকিয়ে ওঠেন। নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, যে ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি দলকে জয়ের আরও কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, তাতে তিনি ও ভাবে আউট হয়ে দলকে বিপদের মুখে ফেললেন! তবে ম্যাচটি হেরে গেলে বাদোনির আফসোস বাড়ত বৈকি! ভাগ্যিস শেষ বলের নাটকে এক উইকেটে ম্যাচ পকেটে পুড়ে ফেলে লখনউ! তাই কিছুটা হলেও ক্ষততে প্রলেপ পড়ে বাদোনির।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। বোলার ছিলেন হার্ষাল প্যাটেল। ওভারের প্রথম বলে ১ রান নেন জয়দেব উনাদকাট। পরের বলেই মার্ক উড বোল্ড হয়ে যান। তৃতীয় বলে রবি বিষ্ণোই স্ট্রাইকে এসেই ২ রান নেন। চতুর্থ বলে সিঙ্গল নেন তিনি। আর তখনই ম্যাচ টাই হয়ে যায়। হারের আর কোনও সম্ভাবনা থাকে না লখনউয়ের। আর ১ রান করলেই জয় আসবে। হাতে ২ বল বাকি। তখন পঞ্চম বলে আউট হয়ে যান উনাদকাট। ম্যাচ একেবারে জমে দই।
আরও পড়ুন: IPL-এ কোহলির ঐতিহাসিক রেকর্ড ভাঙতে পারেন একমাত্র শুভমনই- বড় দাবি রবি শাস্ত্রীর
শেষ বলে লখনউয়ের প্রয়োজন ছিল আর ১ রান। হাতে ছিল ১ উইকেট। গোটা চিন্নাস্বামী জুড়ে তখন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি। টিভির সামনে যাঁরা বসেছিলেন, তাঁদেরও উত্তেজনার পারদ তখন আকাশছোঁয়া। আবেশ খানকে বল করতে গিয়ে নন স্ট্রাইকিং এন্ডে রবি বিষ্ণোইকে রানআউট করেন হার্ষাল। তবে সফল হননি। আম্পায়ার ডেড বল ঘোষণা করেন। এখানেই শেষ নয়। এর পরেও ছিল চূড়ান্ত নাটক। শেষ বলে আবেশ খান ব্যাটে ঠেকাতে ব্যর্থ হন। কিন্তু উইকেটের পিছনে সঠিক ভাবে বল সংগ্রহ করতে পারেননি দীনেশ কার্তিক। দৌড়ে ১ রান নিয়ে নেন আবেশ এবং রবি। জয়ের পর উত্তেজনায় মাঠে হেলমেট ছুঁড়ে ফেলে দেন আবেশ। ১ উইকেটে ম্যাচ জিতে শেষ হাসি হাসে রাহুলের টিম। আরসিবি-র ডেরায় উত্তেজনায় পাগলপাড়া হয় লখনউ সুপার জায়ান্টস।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।