নিজের পঞ্চম আইপিএল ফাইনাল জিতলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। আর ট্রফি জয়ের পর তিনি বুঝিয়ে দিলেন, তিনিও মানুষ। তাঁর মধ্যেও আবেগ আছে। গতকাল ধোনি কার্যত জানিয়ে দিলেন যে আগামী বছরও হলুদ জার্সি পরে মাঠে নামার চেষ্টা করবেন তিনি। নিজের অনুরাগীদের এই 'উপহার' দিতে চান ধোনি। এবছর গোটা আইপিএল-এর রঙ যেন হলুদই ছিল। প্রায় সবাই ভেবে নিয়েছিলেন যে এটাই হয়ত ধোনির শেষ টুর্নামেন্ট। তাই চেন্নাই ছাড়া অন্যান্য শহরও হয়ে উঠেছিল ধোনির 'ঘরের মাঠ'। এমনকী আইপিএল ফাইনালেও 'হলুদের ঢেউ' দেখা গিয়েছিল গতকাল। এই আবহে আইপিএল জয়ী অধিনায়ককে স্বভাবতই অবসর নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। আর তার জবাবে ধোনি বলেন, 'আমার তো মনে হয় এটাই অবসর গ্রহণের সেরা সময়। তবে আমি নতুন করে যে ভালোবাসা পেয়েছি... এখান থেকে বিদায় নেওয়াই সহজ কাজ। তবে এর থেকেও কঠিন কাজ হবে আগামী ৯ মাস কঠোর পরিশ্রম করে আরও একটি আইপিএল খেলা।'
এদিকে ধোনি মানেই আবেগের চিহ্ন নেই। সেই ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর কিছুটা আবেগপ্রবণ হতে দেখা গিয়েছিল তাঁরে। এরপর ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে রানআউট হয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। তবে গতকাল ধোনি ছিলেন পুরোপুরি ভিন্ন। জয়ের পর জাদেজাকে তুলে নিয়েছিলেন কোলে। প্রাথমিক ভাবে জয়ের পর শান্ত হয়ে ডাগআউটে বসেছিলেন তিনি। কবে শেষ পর্যন্ত আর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। যা দেখে অনেকে অবাকও হয়ে থাকতে পারেন। কারণ আবেগপ্রবণ ধোনি দেখতে অভ্যস্ত নন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। এই আবহে আবেগপ্রবণ হওয়া নিয়ে ধোনি বলেন, 'আমিও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। এই বছরের প্রথম ম্যাচে সবাই আমার নাম ডাকছিল। আমার চোখে জল চলে এসেছিল। আমি ডাগআউটে বসে কিছুটা সময় নিয়েছিলাম নিজের জন্য। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমাকে এটা উপভোগ করতে হবে। আমি মনে করি আমি যা, তারা আমাকে তার জন্যই ভালোবাসে। আমার পা মাটিতে থাকে। তাই তারা আমাকে ভালোবাসে। আমি নিজেকে এমন ভাবে সবার সামনে তুলে ধরি না, যেটা আমি নই। আমি সবকিছু খুব স্বাভাবিক রাখতে চাই।' ধোনি আরও বলেন, 'প্রতিটি আইপিএল ট্রফি খুব বিশেষ। তবে আইপিএল-এর সবথেকে বিশেষ দিক হল প্রতিটি কঠিন ম্যাচের জন্য তৈরি থাকতে হবে। আজকে আমরা বেশ কিছু ভুল করেছি। বোলিং দফতর সেভাবে ভালো করতে পারেনি আজ। তবে ব্যাটিং দফতর তাদের ওপর থেকে চাপ সরায়।'
এদিকে মাঠে রাগ করার বিষয়েও মুখ খোলেন ধোনি। বলেন, 'হ্যাঁ মাঠে আমারও বিরক্তি হয়। আমিও মানুষ। তবে আমি তাদের জুতোয় পা গলিয়ে দেখি।' এদিকে গতকাল আজিঙ্কা রাহানে এবং আম্বাতি রায়ডুর প্রশংসা করেন ধোনি। এই দুই প্রবীণ ক্রিকেটার সিএসকে-র হয়ে ম্যাচ ঘোরান মাঝের ওভারগুলিতে। ধোনি বলেন, 'আজিঙ্কার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই সে যখন ছিল, তখন ততটা চিন্তা করছিলাম না।' এরপর রায়ডুকে নিয়ে ধোনি বলেন, 'ও অনেকটা আমারই মতো। বেশি ফোন ব্যবহার করে না। আমি আশা করি জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ে ও ভালো করবে।' অবসর নেওয়া ক্রিকেটাকরকে নিয়ে ধোনি বলেন, 'রায়ডুর বিষয়ে সবথেকে ভালো বিষয় হল সে সবসময় নিজের ১০০ শতাংশ দেবে। তবে সে দলে থাকলে কোনওদিন ফেয়ারপ্লে পুরস্কার পাওয়া যাবে না। আমি বহু বছর ধরে রায়ডুর সঙ্গে খেলেছি। আমরা একসঙ্গে ইন্ডিয়া এ দলে ছিলাম। সে স্পিন ও পেস দুটোই ভালো খেলে। আমার মনে হয়েছিল আজকে ও কিছু দুর্দান্ত করবে।'
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।