কঠিন পরিশ্রম কখনই বৃথা যায়না, কঠিন পরিশ্রম করলে তার ফল একদিন দেখতে পাওয়া যায়। এই প্রবাদের সব থেকে বড় উদাহরণ হলেন ভারতের হকি দলের অন্যতম সদস্য সুমিত কুমার। ভারতীয় দলের মাঝমাঠের ভরসা সুমিত, জীবন লড়াইয়ের বহু পথ অতিক্রম করে অলিম্পিক্সে পদক জিতলেন। ভারতকে ৪১ বছরের পদকের খরা কাটালেন। তবে ভারতের এই তারকা খেলোয়াড় একদিন জীবন চালানোর জন্য ধাবাতে টেবিল পরিষ্কারও করেছিলেন। সুমিত কুমার হলেন কঠিন যুদ্ধ জয়ী এক সৈনিক।
গ্রাহাম রিডের অন্যতম সেরা অস্ত্র হলেন সুমিত কুমার। যিনি হরিয়ানার সোনেপাতের কুরাদ গ্রামের গরিব পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। সুমিতের বাবা একজন ভূমিহীন শ্রমিক ছিলেন। গরিব পরিবার থেকে দুই ভাই অমিত ও সুমিত হকি খেলা শুরু করেছিলেন। কিন্তু অর্থের অভাবে খেলা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন অমিত, পরে দাদার দেখান পথে হেঁটে যান সুমিত। তবে এই লড়াই চালাতে গিয়ে সুমিতকে একটা সময় হোটেলে টেবিল পরিষ্কারও করতে হয়েছিল।
নিজের খাবার পয়সা বাঁচানোর জন্য অনুশীলনের সময় ট্রেনের টিকিটের পয়সা বাঁচাতেন সুমিত। হোটেলে কাজ করে পাঁচ বছর নিজের অনুশীলন চালিয়েছিলেন। হোটেলে কাজ করে নিজের খাবার ও অন্যান্য খরচ চালাতেন সুমিত। ফল ও প্রয়োজনীয় খাবারের পয়সা বাঁচাতে ও খেলার সামগ্রি কেনার জন্য ট্রেনের টিকিট কাটতেন না। এমন কষ্ট করে আজ ব্রোঞ্জ পদক জয়ী দলের সদস্য হতে পেরেছেন সুমিত কুমার।
হরিয়ানার সোনেপাতের কুরাদের প্রত্যেকটা গলিতে সুমিতের কঠিন লড়াইয়ের গল্প লুকিয়ে রয়েছে। এলাকার প্রত্যেকেই তা জানেন। কী ভাবে খাবারের পয়সা বাঁচানোর জন্য সুমিত একটা সময় টিকিট ছাড়াই যাত্রা করতেন।
বহু খেলোয়াড়কে জীবনে এগিয়ে যেতে হলে বহু ত্যাগ করতে হয়, সেই ত্যাগের বহু গল্প রয়েছে সুমিতের জীবনে। সে তার দাদার বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারেননি। গত বছরেই সুমিতের মা মারা যান, তাই ব্রোঞ্জ পদক জিতে মাকে উৎসর্গ করেছেন সুমিত। ভারতীয় দলের কোচ গ্রাহাম রিড সুমিত কুমারকে নিয়ে গর্ব করেন। তিনি যখন তরুণদের মোটিভেট করেন তখন সুমিতের উদাহরণ দেন। সেটা যে ভুল নয় তা প্রমাণ হল টোকিও অলিম্পিক্সে। সুমিত দেখালেন কঠিন পরিশ্রম করলে নিজের স্বপ্নপূরণ করা যায়।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।