লোকালয়ে হাতির হানা অব্যহত। ফের হাতির তাণ্ডবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। গত দুদিন ধরে কোচবিহারের দিনহাটা ও মাথাভাঙ্গা এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে বেড়াচ্ছে হাতির দল। সেই হাতির দলের হানায় ৪ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় বন কর্মীদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, বনকর্মীরা হাতির দলটি জঙ্গলে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: হাতি তাড়াতে গিয়ে মৃত্যু হুলা পার্টির ২ সদস্যের, আহত ৪, অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন
বনদফতর এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম হল রেখারানি রায় (৬৮), জয়ন্তী সরকার (৪৬), বুদ্ধেশ্বর অধিকারী (৬০) এবং আনন্দ প্রামাণিক (৪০)। এরমধ্যে বুদ্ধেশ্বর এবং আনন্দ মাথাভাঙ্গার পারাডুবি গ্রামের বাসিন্দা। বাকি দুজন ঘোকসাডাঙার উনিশবিশা গ্রামের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে গ্রামের মাঠের জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন বুদ্ধেশ্বর অধিকারী। সেই সময় আচমকা হাতির হামলায় তার প্রাণ যায়। আনন্দ প্রামাণিকও মাঠে কাজ করছিলেন। সেই সময় আচমকা হাতির হামলায় তার মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ দিন হাতির দলটিকে জঙ্গলে তাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন বনকর্মীরা। কিন্তু, এত তাড়াতাড়ি যে পারাডুবি গ্রামে হাতি ঢুকে পড়বে তা কেউই বুঝে উঠতে পারেননি। তাছাড়া প্রশাসনের তরফে এই বিষয়ে তাদের আগে থেকে সতর্ক করা হয়নি। তাহলে তাদের প্রাণ বাঁচানো যেত বলে জানান স্থানীয়রা।কোচবিহারের বনবিভাগের আধিকারিক বিজন নাথ জানিয়েছেন, জলদাপাড়া এবং কোচবিহারের ও উদ্ধারকারী দল হাতিগুলিকে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও শুক্রবার পর্যন্ত হাতিগুলিকে এগুলিকে জঙ্গলে ফেরানো সম্ভব হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, উনিশবিশা গ্রামে যে হাতির দল ঢুকে পড়েছিল সেটি দুটি ভাগে ভাগ হয়ে গ্রামবাসীদের হামলা চালিয়েছিল। তখনই বাজারে ওই দুই মহিলাকে হাতি পিষে দেয়। এই ঘটনার পরে বনদফতরের ভূমিকায় বেজায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, ওই দলে ৬টি হাতি ছিল। ওই দলটি পাতলাখাওয়া হয়ে বুধবার রাতে চলে আসে কোচবিহারের দিকে। বৃহস্পতিবার সকালে হাতিগুলি কোচবিহার ১ ব্লকের হাড়িভাঙা গ্রামে আসে। এরপর হাতির দল চলে যায় দিনহাটার মাতালহাট গ্রামে। ওই গ্রামের এক বাসিন্দা হাতির হানায় আহত হয়েছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগ যদি নির্জন এলাকা দিয়ে হাতির দল তাড়িয়ে নিয়ে যেত তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটত না। জানা গিয়েছে, হাতির দল আগেও মাথাভাঙ্গা এলাকায় প্রবেশ করেছিল। মূলত খাবারের টানেই ওই এলাকায় প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে হাতির দল হানা দিয়ে থাকে।