বীভৎস দুর্ঘটনা ঘটেছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায়। এখানে রাতে কাজ চলছিল। তখন চলন্ত কনভেয়ার বেল্টে পড়ে যায় শ্রমিকের দেহ। আর সঙ্গে সঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। বেশ কয়েখ ঘন্টার চেষ্টায় শরীরের খণ্ডগুলি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই অস্থায়ী শ্রমিকের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কারখানার সেফটি বিভাগের গাফিলতির জন্য হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশের দাবি করেছে সিটু।
ঠিক কী ঘটেছে দুর্গাপুরে? দুর্গাপুরের বঙ্কিমচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা এই শ্রমিকের নাম আশুতোষ ঘোষাল (৫৫)। আশুতোষবাবু দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ‘র মেটেরিয়াল হ্যান্ডলিং প্ল্যান্ট’–এর ওল্ড সাইডে অপারেশন বিভাগের কর্মী ছিলেন। পরিবারে তাঁর স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে। তাঁর ছেলের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল কয়েকদিন পরেই। তার মধ্যে এই মর্মান্তিক ঘটনার ঘটে গেল। বৃহস্পতিবার রাতের শিফটে কাজ করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি চলন্ত কনভেয়ার বেল্টের উপর পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দেহ চার টুকরো হয়ে যায় বলে খবর।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিকরা। তাঁরাই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার গাফিলাতির জন্য এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন। এর ঠিক আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ঠিকা শ্রমিক তড়িতাদহ হন। এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ২০ নভেম্বর এই কারখানার ব্লাস্ট ফার্নেস লেডেল থেকে গলিত লোহা ছিটকে মৃত্যু হয় তিন ঠিকা শ্রমিকের। এবার কনভেয়ার বেল্টে পড়ে মৃত্যু।
ঠিক কী বলছে শ্রমিক সংগঠন? দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক সংগঠন সিটুর অভিযোগ, এই কারখানায় প্রত্যেকদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। আর সংস্থার আধিকারিকরা সান্তনা দিচ্ছেন, উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। এই ঘটনায় বিস্তারিত রিপোর্ট কারখানার সিটু নেতৃত্বের কাছে চেয়েছেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তপন সেন। তিনি বলেন, ‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। আমি শোকাহত। মৃত শ্রমিককে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই।’