২০১৮ সালে আসানসোলের দাঙ্গায় খুন হয়েছিল ইমাম এমদাদুল্লাহ রশিদের ১৬ বছরের পুত্র সিবগতউল্লা। সেই মামলায় বেকসুর খালাস অভিযুক্তরা। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীই দিলেন না ইমাম। বাবার সাক্ষী না মেলায় শেষে অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করতে বাধ্য হয় আদালত। ভরা আদালতের মধ্যেই বিচারককে ইমাম স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি দোষীদের নিজের চোখে দেখেননি। তাই তিনি মিথ্যা সাক্ষী দেবেন না। ইমাম ছাড়াও আরও ১০ জন এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। তারাও জানিয়ে দিয়েছেন, অভিযুক্তদের তারা চোখে দেখেননি। এরপরেই শুক্রবার অপহরণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্ত পিন্টু যাদব ও বিনয় তিওয়ারিকে বেকসুর খালাস করে আদালত।
উল্লেখ্য, ঘটনার পরে আসানসোল যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সেই সময় পুত্রহারা শোকের মধ্যেও প্রতিহিংসার বদলে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন ইমাম। সন্তানহারা বাবার সাক্ষ্যের অভাবে দোষীরা যে ছাড়া পেয়ে যাবেন তা জানার পরেও সাক্ষী দিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন ইমাম। ভরা আদালতে ইমামের এরকম কথা শুনে অবাক আসানসোল আদালতের প্রবীণ আইনজীবীরাও। মামলার সহকারী প্রধান আইনজীবী স্বরাজ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমি ৪৮ বছর ধরে আইনজীবীর পেশায় রয়েছি। কিন্তু, একজন সন্তানহারা পিতা যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিলেন না তা আমার পেশাগত জীবনে এই প্রথম দেখছি।’ এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন আইনজীবিদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে আসানসোলে রামনবমীর দিন দাঙ্গায় বেশ কয়জন খুন হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। যার মধ্যে অনেকেই শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়ে যায়। অবশেষে মূল অভিযুক্ত দুজনকে বেকসুর খালাস করল আদালত। ইমাম বলেন, ‘সেদিনও বলেছিলাম, আজও বলছি যা নিজের চোখে দেখিনি তার সাক্ষী কীভাবে দেব। উপরওয়ালা তাদের প্রকৃত বিচার করবেন। উল্লেখ্য দু'বছর বন্ধ থাকার পর আবার রামনবমীর মিছিল হওয়ার কথা রয়েছে আসানসোলে। এ প্রসঙ্গে ইমামের বার্তা, ‘আসানসোল যেন শান্ত থাকে সেই অনুরোধ সকলকে করব।’