বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে জট তৈরি হয়েছে। তারইমধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও আগামী জানুয়ারিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়া হবে। সেজন্য রাজ্য সরকারের আরও ২,২০০ কোটি টাকা খরচ হবে।
সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের (স্যাট) নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তারইমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠায় রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনগুলি। সেই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার নবান্নে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বলেন, ‘আপনাদের চিঠিটা আমায় খুব টাচ করেছে (আমার মন ছুঁয়ে গিয়েছে)। দেখুন আমি আবেগতাড়িত লোক। রাগ হলে আমি রেগে যাই। সেটা আপনি আমায় দেখলে বুঝতে পারবেন। আমি খুশি হলেও খুশি হই, সেটাও আমায় দেখে বুঝতে পারবেন। আমি যদি বিরক্ত হই, সেটাও দেখে বুঝতে পারবেন। আমি স্বচ্ছতা মেনে করি। ছলনা করে রাজনীতি করতে শিখিনি। করিও না।’
তিনি জানান, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কাজে তিনি রীতিমতো সন্তুষ্ট। সেজন্য কর্মীদের দিকটিও সর্বদা বিবেচনা করে রাজ্য সরকার। মমতার কথায়, ‘আপনারা যে চিঠিটা পাঠিয়েছিলেন, তা আমার হৃদয় স্পর্শ করে গিয়েছে। সত্যি, আপনারা কাজটা করছেন। তাই আপনাদের জন্যও আমাদের ভাবতে হয়।’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের কর্মীরা সমস্যায় পড়ুন, সেটা চায় না রাজ্য সরকার। তাঁদের সরকারের দিকেও নজর আছে তাঁর সরকারের। মমতা বলেন, ‘আমি যখন আপনাদের সঙ্গে মিলিত হই, আপনারা আমায় অনেক সাজেশন (পরামর্শ) দেন। আমার হৃদয় যদি কখনও কখনও আবেগে আপ্লুত হয়ে আমি যদি কিছু করতে পারি, তাহলে আমি নিজেকে কৃতার্থ বলে মনে করি। আগেও আপনারা বলেছিলেন। আমরা পে-কমিশন করে (দিয়েছি)। সেজন্য আমাদের বছরে ১৪,০০০ কোটি টাকা বেশি লাগবে। সেটাও আমরা করে দিয়েছি। ছোট্ট একটা কথার মধ্যে আমি আপনাদের একটা কথা বলে দিই। প্রতি বছর জানুয়ারিতে আমরা তো একটা ডিএ দিই। আমার ক্ষমতা থাক, বা না থাক, যেখান থেকে হোক জোগাড় করব। এবার জানুয়ারিতেও আপনারা তিন শতাংশ ডিএ পাবেন। এই পরিস্থিতির মধ্যেও।’
তবে রাজ্যের হাতে যে টাকা নেই, তাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'যদিও আমার টাকা নেই। পয়সা নেই। আমি ৮৫,০০০ কোটি টাকার বেশি পাই। কিন্তু তাও আমরা মাসের প্রথম দিনে বেতন দিই। অনেক রাজ্য দিতে পারছে না। কেন্দ্র দু'বছরের জন্য ডিএ বন্ধ করে দিয়েছে।'
পরে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, অন্য বছর দু'শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়। এবার তা বাড়িয়ে তিন শতাংশ করা হয়েছে। অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, ২০১১ সালে ৩০ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়েছিল। তারপর ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে যখন পে-কমিশন চালু করা হযেছিল, ১২৫ শতাংশ ডিএ হয়ে গিয়েছিল। তারপর ১২৫ শতাংশ ডিএ বেসিকের সঙ্গে যোগ করে ২.৭৫ গুণ করে বেতন দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘মার্জড ডিএ এবং বেসিকের উপর ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যেটা সংশোধিত পে-স্কেল, তার উপর দেওয়া হবে।’