সিন্ডিকেটের পুরনো বিবাদেই খুন হয়েছেন বিরাটির যুবক শুভ্রজিৎ দত্ত ওরফে পিকুন। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। পরিবারের দাবি, বাবুলাল নামে স্থানীয় এক ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী খুন করিয়েছে পিকুনকে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বছর পাঁচেক আগে পর্যন্ত দুজনের ভাব ছিল গলায় গলায়। ধার শোধ নিয়ে বিবাদের জেরে বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। এর পর ধারের টাকা ফেরত চাইতেই পিকুনের শত্রু হয়ে ওঠেন বাবুলাল।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বুধবার সকালে ঘটনার সূত্রপাত। বাবুলালের কাছে ধারের টাকা ফেরত চান পিকুন। এই নিয়ে ২ জনের হাতাহাতিতে বাবুলালের মাথা ফেটে যায়। বাইপাসের ধারে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
এর পর তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চলে যান পিকুন। ফেরার সময় বিরাটি মোড়ের কাছে তাঁকে লক্ষ্য করে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। মোট ৫টি গুলি লাগে পিকুনের গায়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বছর পাঁচেক আগেও ব্যবসায়িক বন্ধু ছিলেন বাবুলাল ও পিকুন। এমনকী বাবুলালকে ভাইফোঁটা দিতেন পিকুনের বোন। এরই মধ্যে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য পিকুনের কাছে ৪ লক্ষ টাকা ধার চায় বাবুলাল। সেই টাকা ধার দেয় পিকুন। কিন্তু পরে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে বাবুলাল। এর জেরেই ২ জনের বিচ্ছেদ হয়। বাবুলালকে ছেড়ে মহারাজ নামে আরেক সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীর দলে যোগ দেন পিকুন। ওদিকে বিজেপিতে নাম লেখান বাবুলাল।
বিজেপিতে নাম লেখানোর জেরে বাবুলালের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিতে থাকে পুলিশ। যার জেরে বাড়িছাড়া হন তিনি। সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনের আগে এলাকায় ফেরেন তিনি। পিকুনের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, এর পর ফের বাবুলালের কাছে ধারের টাকা ফেরত চাইতে পিকুনকে পরামর্শ দেন মহারাজ। পিকুনের স্ত্রী গর্ভবতী সেকথা জানিয়ে টাকা ফেরত চাইতে বলেন তিনি। বুধবার সকালে বাবুলালের কাছে পিকুন টাকা ফেরত চাইলে বিবাদ বাধে। তার জেরেই খুন বলে দাবি পরিবারের।
ওদিকে হাসপাতালে ভর্তি বাবুলালের ওপর কড়া নজর রাখছে পুলিশ। ছুটি পেলেই গ্রেফতার করা হবে তাঁকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, পেশাদার খুনি দিয়েই খুন করা হয়েছে পিকুনকে। চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ৫ বার নির্ভুল নিশানা সাধা যে কারও কাজ নয়। অভিযুক্ত বাবুলালের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন পিকুনের মা।