কলকাতায় রেজিস্ট্রি বিয়ে করেছিলেন রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। ২৮ মে বিয়ে উপলক্ষ্যে পাত্রীর পিকনিক গার্ডেনের বাড়িতে উপস্থিত হন দুই পরিবারের সদস্যরা। অথচ অভিযোগ, বিয়ের ঠিক পরদিন থেকেই স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরীকে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়ক। এমনকী নিজের স্ত্রীকে সামাজিক স্বীকৃতি দিতেও অস্বীকার করেন। স্ত্রীর কাছ থেকে ১ কোটি টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ। তাই বিধায়কের বিরুদ্ধে তিলজলা থানায় এফআইআর দায়ের করেন স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে দলেরই বিধায়কের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। বিধায়ক স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরীর অভিযোগ, গত ২৮ মে রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর সঙ্গে তাঁর রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়। বিধায়কের মা, বাবা, ভাই, দিদি, জামাইবাবু সকলে সেখানে উপস্থিত থেকে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকে বিধায়ক তাঁকে স্ত্রীর পরিচয় দিতে নারাজ। তাঁর থেকে ১ কোটি টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। আর ডিভোর্সের দাবি তুলে বিধায়ক মানসিক নির্যাতন করছেন। বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর বাবা ভূপাল অধিকারী এবং ভাই অনুপম অধিকারীর বিরুদ্ধেও তিলজলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী। কারণ এঁরা বধূ নির্যাতন করতে শুরু করেছেন।
অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর স্ত্রী স্বস্তিকা আইনের ছাত্রী। পড়ার সূত্রে কলকাতার বাইরে থাকেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন আগেই বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। সম্পর্ক চিরস্থায়ী করতে রেজিস্ট্রি বিয়ের জন্য ১৩ মার্চ অনলাইনে আবেদন করেন দু’জনে। স্বস্তিকার দাবি, মুকুটমণির কথায় রেজিস্ট্রির আগের রাতে কলকাতায় ফেরেন তিনি। ২৮ মে পিকনিক গার্ডেন এলাকায় স্বস্তিকার বাড়িতে দুই পরিবারের উপস্থিতিতে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। স্বস্তিকা বলেন, ‘সবার সামনে রেজিস্ট্রি পেপারে সাক্ষী হিসেবে আমার মা এবং মুকুটমণির ভাই সই করেন। কিন্তু বিয়ের পরদিনই মিউচুয়াল ডিভোর্সের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। আমি সামাজিক বিয়ের কথা বললে সেই স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে। আমাদের বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে চাপ দিয়েছিল।’
কেন এমন ঘটনা ঘটল? স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরীর অভিযোগের পাল্টা বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আর স্বস্তিকা বলেন, ‘২৯ মে জানতে পারি আমি ছাড়াও একাধিক মহিলার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্ক আছে মুকুটমণির।এমএলএ হস্টেলে থাকাকালীন বাইরে থেকে বিভিন্ন মহিলাদের নিয়ে আসত। ক্যান্টিন থেকে চিকেন অর্ডার করে রাতভর ওর ঘরে পার্টি চলত। তারা এখন ওকে আমার থেকে সরে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। তাই আমাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।’ পুলিশ সূত্রে খবর, বিষয়টি সম্পূর্ণ তদন্তসাপেক্ষ। এই বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণির সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি। মেসেজেরও জবাব দেননি। তবে এই ঘটনা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হবে।