পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে খেজুরিতে গিয়ে বামফ্রন্ট এবং বিজেপিকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএম আমলে নন্দীগ্রামে ঢোকা যেত না বলে কড়া ভাষায় দাবি করলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। একইসঙ্গে আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে আক্রমণ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। সরকারি মঞ্চ থেকে এদিন জেলার দু’লাখেরও বেশি মানুষকে পরিষেবা প্রদান করা হয়েছে। সেখান থেকেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিজেপি ও সিপিএমকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা শোনা যায় তাঁর মুখে। কিছুদিন আগে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কৃতিত্ব নিজের বলে দাবি করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তিকুঞ্জে ছিলেন বলে দাবি করেছিলেন। আর যেন সেই কথারই জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে গদ্দাররা ঘরে বসে ছিল। একসময়ে খেজুরিতে সিপিএমের অত্যাচারে ঢোকা যেত না। সিপিএম হার্মাদরাই এখন বিজেপির ওস্তাদ। নন্দীগ্রামে অপারেশন সূর্যোদয়ের সময়ে গদ্দাররা বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। তখন প্রতিবাদে নেমেছিলাম আমি নিজে। আমার ওপরে পেট্রল বোমা থেকে শুরু করে মদের বোতল নিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করা হয়েছিল।’
আর কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রায় এক হাজার প্রকল্পের শিলন্যাস এবং উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের মঞ্চ থেকেই সিপিএমের বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। তিনি বলেন, ‘সিপিএমের হার্মাদরা এখন বিজেপির ওস্তাদে পরিণত হয়েছে। একসময় খেজুরিতে ঢোকা যেত না। সিপিএমের অত্যাচারে মানুষ অত্যাচারিত। আমার একজন ছাত্রী বন্ধুকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছিল। এরপর তাঁর বাবার নামে দোষ দেওয়া হয়েছিল। সিপিএমগুলি এখন বিজেপি হয়েছে। আমাদের পড়ুয়াদের ভোট পরবর্তী হিংসার নামে জেলে ঢুকিয়েছে। ভাবছে এইভাবে চিরদিন চলে যাবে।’
শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে কী বলেছেন? পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরিতে ঠাকুরনগর মঞ্চে এদিন মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে। তাঁর কথায়, ‘নন্দীগ্রামে অপারেশন সূর্যোদয়ের সময়ে গদ্দাররা বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে কোনও আঁচড় লাগেনি বাবুর গায়ে। আমার ওপরে পেট্রল বোমা থেকে শুরু করে মদের বোতল নিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করা হয়েছিল। আমি যতদিন বাঁচব ততদিন আমায় আন্দোলন থেকে কেউ রুখতে পারবে না। ঈশ্বর–আল্লা তেরে নাম/ সবকো সুমতি দে ভগবান। দলবদলের আগে সমস্ত সুবিধা নিয়েছেন যে, সে এখন বড় বড় কথা বলছে। এই সব কিছুর জবাব মানুষ দেবে। খেজুরি–তমলুক–নন্দীগ্রামের ছেলেমেয়েদের জেলে পাঠিয়েছেন সেই বিশ্বাসঘাতক।’