তীব্র দাবদাহে পুড়ছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। একেই তো গ্রীষ্মের প্রখর রোদ, তার ওপর তাপপ্রবাহ চলছে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায়। অস্বস্তিকর গরমে সানস্ট্রোকে মৃত্যু হচ্ছে অনেকেরই। বেশ কিছু জেলার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পার করে ৪২ ডিগ্রিতে ছুঁয়ে গিয়েছে। এরইমধ্যে ১৩ দিন ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী থানার কাঁলেকাতলা ১ পঞ্চায়েতের বিশ্বরম্ভা কাঁদাপাড়া গ্রাম। বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিতে এলাকার একমাত্র ট্রান্সফরমারটি বিকল হয়ে পড়েছে। তা মেরামত করার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যার ফলে তীব্র গরমে সমস্যায় পড়েছেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। উপরন্তু, তাদের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়ে পুলিশি হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে। দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষোভে ফুঁসছেন কাদাপাড়ার বাসিন্দারা। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস হতে হচ্ছে তাদের। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গ্রামে প্রায় ২০০ টি বাড়ি রয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় হাত পাখাই এখন তাদেরএকমাত্র সম্বল। তীব্র গরমে ঘরের মধ্যে থাকাও দায় হয়ে পড়েছে। ঘর থেকে বেরিয়ে কোনওভাবে গাছ তলায় বিশ্রাম নিতে হচ্ছে তাদের।
স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য অভিজিৎ দাস জানান, ‘গ্রামের ট্রান্সফরমারটি সপ্তাহ খানেক আগে খারাপ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ অফিস থেকে পুরনো ট্রান্সফর্মার লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেটিও পরে খারাপ হয়ে যায়। এই গ্রামে অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন, বাচ্চা রয়েছেন, অনেক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাও রয়েছেন। এমনকি ব্রেন স্ট্রোকের রোগী অনেক রয়েছেন। এখন বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’ কিছুদিন আগেই ব্রেন টিউমারের অপারেশন হয়েছে ওই গ্রামের বাসিন্দা সুচন্দ্রা মাহিষ্যর মায়ের। বিদ্যুৎ না থাকায় এখন সারাক্ষণ হাত পাখা নিয়ে মায়ের কাছে বসে থাকতে হচ্ছে তাকে। তিনি জানান, ‘ব্যাঙ্গালোর থেকে কিছুদিন আগে আমার মায়ের ব্রেন টিউমারের অপারেশন হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন সবসময় ঠান্ডা হওয়ার মধ্যে রাখতে। কিন্তু, এখন বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ দফতরকে আমরা অনেকবার জানিয়েছি তারপরও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না।’