রাজ্যের নানা প্রান্তে একদল দাঁতালের উৎপাতে অতিষ্ট সাধারণ মানুষ। ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়ায় এই উৎপাত বেশি দেখা যাচ্ছে। গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে পড়া থেকে ফসল খেয়ে নেওয়া—এমন ঘটনায় বিরক্ত গ্রামের বাসিন্দারা। এই নিয়ে একাধিকবার বন দফতরে অভিযোগ পর্যন্ত জানিয়েছেন স্থানীয় বালিন্দারা। এরা সবাই আসলে দলমা পাহাড়ের দাঁতাল বলেই মনে করছে বন দফতর। এছাড়া লালগড়, জামবনি, নয়াবাঁধ, গোপীবল্লভপুর, রানিবাঁধ, বড়জোড়া, বেলিয়াতোর, সোনামুখী, রায়পুরের মানুষজন দাঁতালের ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। তাই দাঁতালদের উত্তরবঙ্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।
বিষয়টি ঠিক কেমন ঘটতে চলেছে? নবান্ন সূত্রে খবর, এই দুষ্টু দাঁতালদের এবার ‘বোর্ডিং স্কুলে’ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে বোর্ডিং স্কুলের অর্থ ডুয়ার্সের জঙ্গল। সেখানে বেশ কয়েকটি দাঁতালকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনকী তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর কানে এই সমস্যার কথা তোলা হয়েছে। কয়েকদিন আগে নবান্নের সভাঘরে বন দফতরের সচিব সমস্যাটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাও করেন। হাতিগুলিকে উত্তরবঙ্গে পাঠানোর প্রস্তাব দেয় বন দফতরই। আর সে কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুষ্টুগুলিকে দাও ‘বোর্ডিং স্কুলে’ পাঠিয়ে। তবে দেখো ওখানে গিয়েও যেন বদমায়েশি না করে।’
আর কী জানা যাচ্ছে? বন দফতরের কয়েকজন কর্তা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, উত্তরবঙ্গে জঙ্গল অনেক ঘন। তাই গরুমারা, চাপরামারি জঙ্গলের হাতিরা এতটা দামাল নয়। কারণ জঙ্গলে ওদের খাবারের সমস্যা নেই। সেই কারণে লোকালয়ে আসে না। কাউকে বিরক্ত করে না। দু’একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা যদিও সেখানে ঘটেছে। তাছাড়া উত্তরবঙ্গের জঙ্গল অনেক মনোরম। ওখানে গিয়ে অন্য হাতিদের সঙ্গে মিলেমিশে এদেরও স্বভাব পাল্টে যেতে পারে।।
তারপর ঠিক কী ঘটল? সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। আর কেন্দ্রকে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি লিখেছে বন দফতর। কারণ, বনের পশুদের এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় পাঠাতে হলে কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হয়। কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেলেই স্থানান্তর করা হয়। তারপর সেখানে কয়েকদিন নজরে রাখা হয়। বন দফতরের অফিসাররা মনে করছেন, ডুয়ার্সে নিয়ে গেলে এই দাঁতালরা পাল্টে যাবে।