জঙ্গলমহল ও সংলগ্ন এলাকাতে প্রায় সারা বছরই হাতির তাণ্ডবে আতঙ্কিত হয়ে থাকছেন মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাঠের পর মাঠ ফসল। এছাড়াও বাড়ছে প্রাণহানি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে হাতির হানা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাই তাণ্ডব রুখতে হাতির গতিবিধির ওপর নজরদারি রাখা খুবই প্রয়োজন। সেই কথা মাথায় রেখে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে বন দফতর।
‘দুষ্টুগুলিকে দাও বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে’, দাঁতালদের নিয়ে রসিক মন্তব্য মমতার
মেদিনীপুর বনবিভাগের কাছে দুটি ড্রোন রয়েছে। যার মধ্যে একটি পরীক্ষামূলকভাবে ওড়ানো হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, মেদিনীপুর বনবিভাগের এলাকায় ৮২টি হাতি রয়েছে। শালবনির পিঁড়াকাটা রেঞ্জে হাতির দু’টি বড় দল ঘুরে বেড়িয়েছে। যার মধ্যে একটি দলে ৩৩-৩৫টি হাতি ছিল। অন্য দলে ছিল দলে ২৬-২৮টি হাতি। নয়া বসত রেঞ্জেও ১০-১২টি হাতির একটি দল দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় যে সমস্ত জঙ্গলে হাতি রয়েছে সেখানে না যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের সতর্ক করছে বনদফতর।
আগে শুধুমাত্র স্থানীয় হাতির দলই জঙ্গলমহল ও সংলগ্ন এলাকায় তাণ্ডব চালাত। তবে এখন ঝাড়খণ্ডের দলমা এলাকার হাতিদের দলও তাণ্ডব চালাচ্ছে। বন আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, দলমা থেকে আসা হাতিরা এখন বেশিরভাগ সময়ই রাজ্যের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কারণ হিসাবে তারা জানিয়েছেন, আগে এই সমস্ত হাতির দল রাজ্যের জঙ্গলে দু-তিন মাস থাকত। তারপর খাবারের খোঁজে ওড়িশা চলে যেত। কিন্তু ওড়িশার সীমানা বরাবর খাল কাটার ফলে এখন হাতির দল সেখানে যেতে পারছে না। তাই তারা বেশিরভাগ সময়েই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। বন বিভাগের পরিসংখ্যান বলছে, শুধুমাত্র মেদিনীপুরে ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে হাতির হামলায়। এই পরিস্থিতিতে হাতির নজরদারিতে ড্রোন ব্যবহার করলে ক্ষয়ক্ষতি রোখা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বন আধিকারিকরা।