বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অক্সিজেনের কমপক্ষে ১০ শতাংশ বাংলায় পাঠানো হোক। ঊর্ধ্বমুখী করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে এমনই আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মমতা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ৫০,০০০ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন আমদানি করছে। তার মধ্যে বাংলার জন্য কমপক্ষে ১০ শতাংশ বরাদ্দ করার আর্জি জানানো হয়েছে।’
কেন্দ্রকে আর্জি জানানোর পাশাপাশি অক্সিজেনের জোগানে যাতে ঘাটতি না হয়, সেজন্য রাজ্য প্রশাসনের তরফেও বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। শনিবার নবান্নে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী-সহ রাজ্যের একাধিক শীর্ষকর্তা। বৈঠকে অক্সিজেনের জোগানের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনায় উঠে আসে, রাজ্যে আপাতত দৈনিক ২২৩ মেট্রিক টন অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। সেখানে সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যে রোজ প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন উৎপাদিত হয়। ফলে রাজ্যে আপাতত অক্সিজেনের কোনও ঘাটতি নেই।
সূত্রের খবর, তবে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বাংলা থেকে ভিনরাজ্যে যে অক্সিজেন পাঠাচ্ছে কেন্দ্র, তা থেকে অক্সিজেন চাওয়া হবে। কারণ ভোট মিলে গেলে আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হবে। তারইমধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে শুধু চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন দেখালে অক্সিজেন মিলবে না। করোনাভাইরাস পজিটিভ রিপোর্ট থাকলে তবেই অক্সিজেন দেওয়া হবে।
পাশাপাশি অক্সিজেন ট্যাঙ্কার কখন, কোথা দিয়ে যাবে, সে বিষয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল এবং প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে আগেভাগেই জানিয়ে রাখার আর্জি জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। সেক্ষেত্রে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার যাতে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারে, সেই বন্দোবস্ত করা হবে। সেইসঙ্গে অক্সিজেনের কালোবাজারি রুখতেও তৎপর হয়েছে পুলিশ। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালানো হচ্ছে।
কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখার এক কর্তা জানান, ‘শহরে অক্সিজেনের কালোবাজারি সম্পূর্ণ বন্ধ করতে বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। দলে আছেন আটজন ইবির আধিকারিক ও পুলিশকর্মী। ইতিমধ্যে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাতে শুরু করেছে সেই দল। যে ওষুধের দোকানগুলি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে, সেগুলির তালিকা তৈরি হচ্ছে। কোন ধরনের অক্সিজেন সিলিন্ডার, কত সংখ্যায় মজুত করা হয়েছে, তার হিসাব নিতে শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। কোনও দোকানের গোডাউনে অতিরিক্ত সংখ্যক অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত করা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।আবার কোনও দোকানে যদি মজুত না থাকে, তাতে সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে কিনা, সেই বিষয়টিও জানার চেষ্টা করছে এই বিশেষ টিম।’