সন্দেশখালিতে গভীর রাতে বাম – বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে পুলিশি তাণ্ডবের অভিযোগ। শনিবার ভোর রাত তিনটে নাগাদ সন্দেশখালি থানার খুলনা গ্রাম পঞ্চায়েতের শীতলিয়া গ্রামে বিরোধী দলের কর্মীদের বাড়িকে মত্ত পুলিশকর্মীরা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। সঙ্গে ছিল তৃণমূলের স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। মারধর করা হয় পরিবারের সদস্যদের। মহিলাদের শ্লীলতাহানির হুমকি দেয় তারা। এমনকী একটি শিশুকন্যাকে মায়ের কোল থেকে নিয়ে ছুড়ে ফেলার অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শনিবার ভোর রাতে গ্রামে আসে একদল মত্ত পুলিশকর্মী। তাদের মধ্যে ছিলেন সন্দেশখালি থানার ওসি। অভিযোগ, পুলিশকর্মীরা এতটাই মত্ত অবস্থায় ছিলেন যে তারা ঠিক মতো দাঁড়াতে পারছিলেন না। সেই অবস্থাতেই ভূজঙ্গ দাস নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ভাঙচুর ও পরিবারের সদস্যদের মারধর করে তারা। দরজা খুলতে অস্বীকার করলে জানলার কাচ ভেঙে মহিলাদের হাত ধরে টানাটানি করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এক মহিলা অভিযোগ করেছেন, তাঁর কোল থেকে শিশুকন্যাকে ছিনিয়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলেছেন এক পুলিশকর্মী। এমনকী শিশুকন্যাকে নিয়েও অশ্লীল মন্তব্য করেছে তারা। গোলমালের শব্দে কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে জড়ো হয়ে যান গ্রামবাসীরা। আটকে রাখেন পুলিশকর্মীদের। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় শীতলিয়া গ্রামে।
আরও পড়ুন: রূপনারায়ণে নৌকাডুবি, গ্রেফতার মাঝি, পিকনিক করতে গিয়ে সব শেষ!
এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ভোর ৩টে নাগাদ পুলিশ এসে বাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। পুলিশকর্মীরা প্রত্যেকে মত্ত অবস্থায় ছিলেন। তাঁরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিলেন। সঙ্গে ছিল সফিকুল গাজি, বাপি দাসের মতো এলাকার পরিচিত তৃণমূলি দুষ্কৃতীরা।
বিজেপির দাবি, আক্রান্তরা তাদের সমর্থক। পুলিশি হামলায় তাদের অন্তত ৪ জন কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি শাসকদলের। এমনকী পুলিশ তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।
ঘটনার পর থেকে ব্যাপক আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয়রা। পুলিশই এভাবে নির্যাতন চালালে নিরাপত্তা চাইতে তারা কাদের কাছে যাবেন, প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: : কার অনুমোদন আছে, কার নেই, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিন, বিএড কলেজ নিয়ে রাজ্যকে বলল HC
শনিবার সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘পুলিশ ও মমতার গুন্ডারা গ্রামবাসীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।’ সন্দেশখালিতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
ওদিকে এদিন খুলনায় আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে বিজেপির প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিজেপি নেতা অরুণ হালদার ও বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার। তাদের রামপুরে ব্যারিকেড করে আটকায় পুলিশ। কলকাতায় সন্দেশখালির প্রতিবাদীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বিধানসভা থেকে রাজভবন পর্যন্ত মিছিল করেন বিজেপি বিধায়করা।