আবার ভিন রাজ্যের শ্রমিকের মৃত্যুর খবর সামনে এল। তবে এটা ঘটেছে খোদ বাংলায়। একেবারে কারখানার মধ্যে। ভিন রাজ্যের শুধু নয়, তিনি একজন মহিলা শ্রমিক। তাই নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। এই মহিলা শ্রমিকের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরও ১২ জন মহিলা শ্রমিক বলে খবর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানা এলাকায় এক কারখানায় এমন ঘটনাই ঘটেছে বলে খবর মিলেছে। আর এই খবর চাউর হতেই প্রতিবাদে কারখানায় ভাঙচুর এবং বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন অন্যান্য শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সোনারপুর থানার পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? কারখানার শ্রমিকদের সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা রুবি কুমারী সোনারপুর এলাকার একটি গেঞ্জি কারখানায় কাজে যোগ দেন। এখানেই একটি হস্টেলেই থাকতেন রুবি কুমারী। কয়েকদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। বমি, কাশী–সহ নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল এই মহিলা শ্রমিকের। তাই রুবি কুমারী বারবার ছুটি নিতে চাইলে কর্তৃপক্ষ তাতে অনুমতি দেয়নি। তাই চিকিৎসাও করানো সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ। বরং অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে দিয়ে কাজ করানো হয় বলেও অভিযোগ। আর তার ফলে তিনি মারা যান। তাতেই তেতে উঠেছে কারখানা চত্ত্বর।
তারপর ঠিক কী ঘটল? রুবির মৃত্যুর পর খবর দেওয়া হয়েছে মৃতার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের। এই বিষয়ে মৃতার এক সহকর্মী সংগীতা কুমারী বলেন, ‘রুবী কুমারী চার দিন অসুস্থ ছিল। ছুটি নিয়ে বাড়ি যেতে চাইলে তা দেওয়া হয়নি। একদিন বিশ্রাম দেওয়া হলেও কোনও চিকিৎসা হয়নি। ম্যাডামের কাছে ওষুধ চাইলেও মেলেনি। অসুস্থ অবস্থায় ওকে দিয়ে কাজ করিয়েছে। এখানে কিছু দেয় না। কোথাও যেতে দেয় না, ছুটিও দেয় না। গালাগালি দেয়। অসুস্থ হলে বলে, এখানে মরে যা, এখানেই পুঁতে দেব।’
আরও পড়ুন: বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রাজ্যের তিন বিধায়ক, শাসক–বিরোধী নেতাদের কী হল?
আর কী জানা যাচ্ছে? তবে এত অভিযোগ উঠলেও তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। বরং রুবি কোনও ছুটির আবেদন করেননি বলেই সাফাই সংস্থার। এই বিষয়ে সংস্থার এইচ আর ম্যানেজার বিশ্বরঞ্জন মিশ্র বলেন, ‘এখানে নার্স আছে। নার্স রুবি কুমারীর রক্তচাপ পর্যন্ত পরীক্ষা করেছিলেন। রক্তচাপ কম ছিল। তার জন্য তাঁকে স্যালাইন পর্যন্ত দেওয়া হয়। তারপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আমি ছুটিই দিই। কিন্তু তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে আগে শুনিনি। আমার কাছে ছুটির জন্য কেউ আবেদন করেননি।’