কাজের সূত্রে অনেকক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকতে হত। বাড়ি ফিরে রাত দুটো পর্যন্ত গল্প করতেন। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে বাড়ির রাজমিস্ত্রির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন স্ত্রী। এমনটাই দাবি করলেন বালির নিশ্চিন্দার গৃহবধূ অনন্যা কর্মকারের স্বামী পলাশ।
তাঁর দাবি, বছর আটেক আগে দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল অনন্যার সঙ্গে। দাম্পত্য জীবনে কোনওদিন সমস্যা হয়নি। ঝগড়াও হয়নি। অ্যাকাউন্টসের কাজের জন্য বাড়ি ফিরতে দেরি হত। যতই দেরি হোক না কেন, অনন্যা অপেক্ষা করতেন। বাড়ি ফিরে রোজ গল্প করতেন স্ত্রী'র সঙ্গে। কখনও কখনও রাত দুটো পর্যন্ত গল্পও চলত বলে দাবি করেছেন পলাশ। তাঁর আক্ষেপ, 'কোথা থেকে কী হল!' কর্মকার পরিবারের বড় ছেলে জানান, ছেলেবেলায় খুব কষ্ট করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। প্রেম করেননি। উপহার দেওয়ার মতোও ক্ষমতা ছিল না।
তারইমধ্যে বুধবার সকালে আসানসোল স্টেশনে দুই বধূ-সহ দুই রাজমিস্ত্রিকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। যে দুই রাজমিস্ত্রি কর্মকারদের দোতলা বাড়ির নির্মাণকাজের জন্য প্রায় ছ'মাস সেখানে ছিলেন। তখনই কর্মকার পরিবারের ছোটো বউ অনন্যার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা শেখর রায়ের। তারইমধ্যে শুভজিৎ দাসের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বড় বউ রিয়া। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান দুই রাজমিস্ত্রি। তবে অনন্যাকে একটি মোবাইল ফোন দিয়ে যান শেখর। সেই ফোনেই দুই বধূর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন শেখর এবং শুভজিৎ। অভিযোগ, গত ১৫ ডিসেম্বর শ্রীরামপুরে শীতের পোশাক কিনতে যাওয়ার নাম করে শেখরের সঙ্গে দেখা করেন অনন্যা ও রিয়া। সেখানেই পালানোর পরিকল্পনা করেন তিনজন। সঙ্গে ছিল রিয়ার সাত বছরের ছেলে আয়ুষও। তাকে নিয়ে প্রথমে সামশেরগঞ্জ যান তিনজন। এক রাত সেখানে কাটিয়ে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন অনন্যা, রিয়া, শেখর এবং শুভজিৎ। তারইমধ্যে মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে অনন্যার অবস্থান জানতে পারেন গোয়েন্দারা। তিনি মুম্বইয়ে আছেন জেনে সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে হাওড়া সিটি পুলিশের একটি দল। পরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, আর্থিক সমস্যা জন্য রাজ্যে ফেরার পরিকল্পনা করছেন চারজন। মুম্বই থেকে ট্রেনে আসানসোল আসছেন তাঁরা। সেখান থেকে বাসে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই খবরের ভিত্তিতে বুধবার সকালে আসানসোল স্টেশন থেকে চারজনকে আটক করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় আয়ুষকে।