লকডাউনের মধ্যেই নাবালকদের বিয়ে দিতে গিয়ে পুলিশের জালে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত মুর্শিদাবাদের চার পরিবার। চারটি বিয়েতে মোট ৭ জন নাবালককে জোর করে অংশগ্রহণ করানো হচ্ছিল বলে ওই পরিবারের সদস্যদের সতর্ক করে মুচলেকা দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, এর মধ্যে এক নাবালিকার বাবা, পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক সম্প্রতি ওডিশা থেকে ফেরার পরে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ অমান্য করেন।
গত মঙ্গল ও বুধবার ফরাক্কা কমিউনিটি ব্লক প্রশাসন মহেশপুর ও তারাপুর গ্রামে তিনটি বিয়ে রুখে দেয়। প্রাথমিক ভাবে, লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্যই পদক্ষেপ করে প্রশাসন। পরে ওই বিয়েগুলিতে নাবালকদের অংশগ্রহণের কথা জানা যায়।
অভিযোগ, বিয়েতে তিন জোড়া নাবালককে জোর করেছিল তাদের পরিবার। তবে অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছাড়া আর কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে খবর।
ফরাক্কার বিডিও রাজর্ষি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘কন্যাশ্রী যোদ্ধা এবং স্থানীয় কয়েকটি ক্লাবের থেকে আমরা নাবালক বিয়ে সম্পর্কে জানতে পারি। তিনটি বিয়েই রুখে দেওয়া হয়েছে। লকডাউন ভেঙে বিয়ের অনুষ্ঠান করার চেষ্টা করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গত শুক্রবার সুতি থানার অন্তর্গত বরাজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আক্রম শেখ তাঁর নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
দুই সপ্তাহ আগে পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক আক্রম কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে ওডিশা থেকে ফিরেছিলেন। তাঁদের সবাইকে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং এই মর্মে বাড়ির বাইরে প্রশাসনের তরফে পোস্টার সেঁটে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও বাড়ির বাইরে বেরিয়ে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেন আক্রম শেখ।
পুলিশের কড়া হস্তক্ষেপের পরে অবশ্য সুর পালটে আক্রম হিন্দুস্তান টাইমস-কে জানিয়েছেন, ‘হাতে কাজ ছিল না বলেই মেয়ের বিয়ের পরিকল্পনা করেছিলাম। বেশি লোককে আমন্ত্রণ করিনি। তবে এবার মেয়ের বয়স ১৯ বছর না হলে তাকে বিয়ে দেব না।’