রথের চাকা পিষে দিল প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াকে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের মাধাইপুর এলাকার রূপ সনাতন মন্দির সংলগ্ন মাঠে। করোনার মধ্যে রথযাত্রায় জমায়েতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ছিল মালদহে। কীভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় রথযাত্রার অনুষ্ঠান হল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জলঘোলা শুরু হয়েছে। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই ছাত্রের নাম সঞ্জয় সাহা(৭)। পুরাতন মালদহের কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন বাচ্চাকলোনি এলাকার বাসিন্দা ছিল সঞ্জয়। সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে রথযাত্রা জমায়েত ও রথ টানা হচ্ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর হয়। উদ্যোক্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিন ওই মাঠেই রূপ সনাতন কর্তৃপক্ষের তরফে রথ যাত্রার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রথেও উপরে উঠে বসেছিল ওই নাবালক। আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১২ ফুট উচ্চতার ওই রথ থেকে নীচে পড়ে গিয়ে চাকার তলায় ঢুকে যায়। মুহূর্তের মধ্যে তার শরীরের ওপর দিয়ে কাঠের চাকা চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের। দুর্ঘটনার পর রথ চালানো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুরাতন মালদহ থানার পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে রথ যাত্রার আয়োজন কীভাবে হল, তা জানতে তদন্তে নামে পুলিশ। অবশ্য এই প্রসঙ্গে রূপ সনাতন মন্দির কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
মৃত ওই পড়ুয়ার মা শিখা সাহা বলেন, ‘ রথ দেখতে যাবে বলে ছেলে খুব বায়না করছিল। তাই ওকে সঙ্গে নিয়ে মাধাইপুরে রথ দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম। ভিড়ের মধ্যে কখন যে ও রথের ওপর উঠে বসল, খেয়াল করিনি। কীভাবে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না। রথের মাথায় ওঠার সময় ওকে কেউ বাধা দিল না-কেন?’
মৃত ওই ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে ওই এলাকার রথ যাত্রা দেখার জেদ ধরেছিল সঞ্জয়। মায়ের সঙ্গে রথযাত্রা দেখতে বের হয় ওই খুদে। সন্ধ্যায় এই দুর্ঘটনা ঘটে যায়।