চলতি বছর বাংলার নির্বাচন মূলত বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে লড়াই হতে চলেছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। শাসক দল ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া। আর বিরোধী বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে মরিয়া। এখানে সামনে আসছে মেরুকরণের রাজনীতি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজেপি হিন্দু ভোটের উপর ভর করে লড়াই করতে চাইছে। আর তৃণমূল সংখ্যালঘু ভোট। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী ভোটে থাবা বসিয়ে বিজেপিকে আটকে দিতে চাইছে বামফ্রন্ট–কংগ্রেস জোট।
এই বিষয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানান, সমস্ত বিরোধী ভোট নিয়ে গেরুয়া রথ রুখে দিতে চাই। দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। সেখানে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়। বামফ্রন্টের অন্যান্য শরিকদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তবে আসাউদ্দিন ওয়েইসির দল মিম–এর প্রসঙ্গে ইয়েচুরি বলেন, ‘প্রস্তাব আসেনি। তবে রাজ্যে মিমের অবস্থান স্পষ্ট হলে ভাবনাচিন্তা করা যাবে।’ সুতরাং রাস্তা খোলা রাখলেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আসাউদ্দিন ওয়েইসি ফুরফুরা শরিফে পীরজাদা আব্বাসের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন। আর তারপরই রাজ্য–রাজনীতিতে হইচই পড়ে যায়। শুরু হয়ে গিয়েছে নানারকম সমীকরণের জল্পনা। এই পরিস্থিতিতে সীতারাম ইয়েচুরির মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
তবে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘বাংলায় মেরুকরণের রাজনীতি শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। আর সংবাদমাধ্যমকে সেইভাবেই ব্যবহার করা হচ্ছে। আর আমাদের ইস্যু হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন জীবন জীবিকা নিয়ে। আর দেশজুড়ে কৃষকদের উপর যে আক্রমণ নেমে এসেছে তা নিয়ে।’
এদিকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দেবে বলে ঘোষণা করেছে মিম। এই পরিস্থিতিতে মিম–এর সঙ্গে জোট জল্পনা জিইয়ে রাখলেন সীতারাম ইয়েচুরি। যা নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘কেরলে সিপিএম যদি মুসলিম লিগের সঙ্গে সমঝোতা করতে পারে, তবে মিম–সিপিএম বাংলায় জোট হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই! ওরা মুখেই বলে ধর্মনিরপেক্ষ। ওসব বাজে কথা।’
অন্যদিকে মিম নিয়ে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত মিমের লক্ষ্য পরিষ্কার নয়। আমরা জানতে চাই তারা কি বিজেপিকে পরাজিত করতে চায়? এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসলে কে লাভবান হবে?’ সুতরাং মিমের বিষয়টি পরিষ্কার হলেই বাকি বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।