ভালো মানুষেরা হয়তো জেলে থাকবেন আর দুষ্কৃতীরা বাইরে ঘুরে বেড়াবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার উল্লেখ করে এমনই আশঙ্কার কথা জানালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার সন্ধ্যায় নিয়োগে সাহায্য চেয়ে বেনজিরভাবে বিচারপতির বিধাননগরের বাসভবনে হাজির হন SLST-র জনা পঞ্চাশেক চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময়ই একথা বলেন তিনি।
এদিন কথোপকথনের সময় এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা গ্রেফতার হয়েছিলাম। প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলাম। শুনে বিচারপতি বলেন, ‘আমি কী বলব বলুন? আপনারা রবীন্দ্রনাথের সেই ছড়াটা পড়েছেন তো? যত সাধু ঢুকে থাকে জেল খানাতে কারণ দুর্বৃত্তরা বাইরে ঘোরাফেরা করে। যারা ভালো মানুষ তাদের সুখে শান্তিতে রাখার জন্য জেলখানাতে ঢুকিয়ে দেয়। সেজন্যই হয়তো আপনাদের জেলখানায় রেখেছিল। আর যারা দুর্বৃত্ত তারা বাইরে অনেক কিছু সেজে বসে আছে। তাই জেলখানায় থাকাটাকে খুব একটা অপমানজনক ধরবেন না। আপনাদের ভাগ্যে ছিল। আমাদের সকলের ভাগ্যেই হয়তো লেখা আছে আমরা কোনও না কোনও সময় জেলখানায় চলে যাব আর দুর্বৃত্তরা বাইরে রাজ করবে।’
এদিন বিচারপতি আসলে রবীন্দ্রনাথের ‘খাপছাড়া’ ছড়াটির উল্লেখ করতে চেয়েছেন। ছড়াটিতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন,
মহারাজা ভয়ে থাকে পুলিশের থানাতে
আইন বানায় যত পারে না তা মানাতে।
চর ফিরে তাকে তাকে সাধু যদি ছাড়া থাকে
খোঁজ পেলে নৃপতিরে হয় তাহা জানাতে,
রক্ষা করিতে তারে রাখে জেলখানাতে।
বিচারপতির এই মন্তব্য আদালতের বাইরে হলেও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। তাদের অনুমান, সমাজের সম্পূর্ণ দুর্বৃত্তায়ন হয়ে গিয়ছে, বিষয়টি বোঝাতে গিয়েই এই উদাহরণ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।