পদস্থ আমলার ছেলের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ায় শোরগোল শুরু হয়েছে নবান্নে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ওই আমলার দফতরের একাধিক কর্মীকে বাড়ি থেকে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই আমলাকেও ঘেরাটোপে পাঠানো হয়েছে। তাঁর সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে নাইসেডে। এরই মধ্যে উচ্চশিক্ষিত পরিবারটির কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রবিবার ভোরে লন্ডন থেকে দুবাই, দিল্লি হয়ে কলকাতা ফেরেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওই পড়ুয়া। বিমানবন্দরে তাঁর শরীরে সংক্রমণের কোনও লক্ষণ মেলেনি। তার পরেও তাঁকে করোনা পরীক্ষা জন্য বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেকথা না শুনে বাড়ি চলে যান তিনি। এর পর সোমবার তিনি যান এমআর বাঙুর হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। অভিযোগ, সেকথাও কানে তোলেননি যুবক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
বেলেঘাটা আইডিতে যাওয়ার বদলে বাড়ি ফিরে আসেন ওই যুবক। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে খবর আসে, বিলেতে ওই যুবক যে পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন সেখানে ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে। সঙ্গে সঙ্গে যুবককে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হতে নির্দেশ দেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। অভিযোগ, সোমবার এই নির্দেশ দেওয়া হলেও মঙ্গলবার সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আসেন তিনি। দেশের ফেরার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর হাসপাতালে পৌঁছন যুবক।
ওদিকে রবিবার সকালে ছেলে বাড়ি ফেরার পর মঙ্গলবার নবান্নে যান তাঁর মা। যিনি নবান্নের আমলা। সেদিন তাঁর সংস্পর্শে আসেন নবান্নের একাধিক কর্মী। কয়েকজন সাক্ষাৎপ্রার্থীও তাঁর সংস্পর্শে এসেছেন বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তাদের খোঁজ করছে স্বাস্থ্য দফতর।
মঙ্গলবার আমলার ছেলের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর বুধবার নবান্নে জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়। জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরও। দফতরের বেশ কয়েকজন কর্মীকে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকতে বলেছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। রবিবার ও সোমবার আক্রান্ত যুবক কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন ও কাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, তাও জানতে কোমর বেঁধে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাদের চিহ্নিত করে ঘেরাটোপে পাঠানো হবে।