Covid-19 Updates: যত সমস্যা বাংলার, কিটের অভাব নেই রাজ্যে : ICMR

যে কিটগুলি খারাপ বেরিয়েছে, সেগুলির জন্য রাজ্যকেই দুষেছে আইসিএমআর।

মাদ্রিদের একটি ল্যাবে চলছে করোনা পরীক্ষা (ছবি সৌজন্য এপি)

করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট নিয়ে রাজ্যে ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) চাপানউতোর অব্যাহত। রাজ্যের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আইসিএমআর দাবি করল, বাংলায় কিটের অভাব নেই।

গত ২২ এপ্রিল পশ্চিবমঙ্গ স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দাবি করা হয়, আইসিএমআরের সুপারিশ মেনে নমুনা পরীক্ষার জন্য কোনও কিট পাঠানো হয়নি। দুটি টুইটবার্তায় স্বাস্থ্য দফতর জানায়, নিম্নমানের হওয়ায় আইসিএমআরের নির্দেশিকা মেনে র‌্যাপিড টেস্টিং কিট ব্যবহার করা হচ্ছে না। বিজিআই আরটি-পিসিআর কিট তুলে নিচ্ছে নাইসেড। আর রাজ্যের হাসপাতালে অ্যান্টিজেন কিট পাঠানো হয়নি।

রাজ্যের দাবি অবশ্য মানতে নারাজ আইসিএমআর। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক উচ্চপদস্থ আইএমসিআর আধিকারিক বলেন, 'এটা (কিটের অভাবে বাংলায় নমুনা পরীক্ষা ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ) সঠিক নয়। কারণ প্রাথমিক করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে কাজ করেছে আইএমসিআর-নাইসেড। সেটি নিয়মিত করোনা পরীক্ষা করছে। গত ২২ এপ্রিলই ৬৩৪ টি টেস্ট (৫৫২ টি নতুন ও ৮২ টি পুরনো) করেছিল নাইসেড। নতুন নমুনার মধ্যে ৫০ টির রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল।'

তিনি জানিয়েছেন, আঞ্চলিকভাবে আইসিএমআর যে ডিপোগুলিতে কিট রাখে, তার মধ্যে অন্যতম হল নাইসেড। তাঁর কথায়, 'দু'দিন অন্তর বা ওদের (রাজ্য) প্রয়োজন মতো আরও আটটি ল্যাবে টেস্টি কিট দেয় প্রতিষ্ঠানটি।'

আইসিএমআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য গত ২২ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের আটটি করোনা ল্যাবে ১৭,১০০ টি স্ক্রিনিং কিট ও ২,০০০ টি কনফার্মেটরি কিট পাঠানো হয়েছিল। সেই তালিকায় ধরা হয়নি নাইসেডে ব্যবহৃত কিট। এমনকী নাইসেডের হাতে বাড়তি আরও ২২,৩০০ কিট রয়েছে। যা খুব কম সময়ের মধ্যেই দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। তিনি জানান, ফলাফলের ক্ষেত্রে ব্যাপক তারতম্যের কারণে শুধুমাত্র র‌্যাপিড টেস্ট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সেগুলি পরীক্ষা করে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

আইসিএমআরের দাবি, কোনও আরটি-পিসিআর কিটে গলদ নেই। বরং ঠিকঠাকভাবে কিটগুলি রাখতে না পারার জন্য রাজ্যের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছে তারা। ওই আধিকারিক বলেন, 'আরটি-পিসিআর কিটগুলি বিভিন্ন সংস্থার। কলকাতার দু'একটি ল্যাবে বিজিআই কিটে সমস্যা পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু কিটের গলদে নয়, বরং সেগুলি সঠিকভাবে মজুত করে রাখা হয়নি। কিটগুলির তাপমাত্রা গুরুত্বপূর্ণ। যদি সেগুলি ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে রাখা না হয়, তাহলে এনজাইমের মান কমে যায় এবং নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট সঠিক হবে না। সেগুলি পালটে দেওয়া হচ্ছে। বাকি ল্যাবে ঠিকঠাক চলছে। এখনও পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। আপাতত দেশজুড়ে শুধু অ্যান্টিবডি নির্ভর টেস্ট বন্ধ রাখা হয়েছে।'

ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, দেশের যে ১৬ টি ডিপোতে কিট মজুত রাখা হয়, সেগুলির ক্ষমতা আরও বাড়ানো হয়েছে। তবে পরিবহনে বিধিনিষেধ থাকায় কিছু সমস্যা হতে পারে বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'পরিবহনে কিছু বিধিনিষেধের জন্য কয়েকটি ডিপো লজিস্টিক সমস্যার মুখে পড়ছে। যে কারণে কিছুক্ষেত্রে জোগান দিতে দেরি হতে পারে। তবে ল্যাবে কোনও কিছু পাঠানো হয়নি, সেটা ভুল। একই কিট সর্বত্র পাঠানো হয়েছে। শুধু একটি নির্দিষ্ট রাজ্যেরই কেন সমস্যা হবে?'

তবে কিটগুলি উপযুক্ত তাপমাত্রায় না রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইসিএমআর স্বীকৃত রাজ্যের ১২ টি ল্যাবের মধ্যে একটি ল্যাবের বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, 'এটা (আইসিএমআরের অভিযোগ) সঠিক নয়। আমরা সঠিক তাপমাত্রা বজায় রেখেছিলাম। আমার বিশ্বাস, আইসিএমআর-নাইসেডের দেওয়া কিট ত্রুটিপূর্ণ এবং অন্যান্য রাজ্যও অভিযোগ করেছে।'