তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কটা কিছুদিন ধরেই বিগড়েছিল। এরপর রাজ্যে কেরালা স্টোরি নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। তা নিয়ে সম্পর্ক কার্যত আরও তলানিতে চলে যায়। তবে বুধবার রাতে তৃণমূলের মুখপাত্র শুভাপ্রসন্নের বাড়িতে গিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি।
তার সঙ্গেই এবার শুভাপ্রসন্নকে নিশানা করে ঝাঁকে ঝাঁকে তির এগিয়ে আসছে তৃণমূলের দিক থেকে। কুণালের পরে তির ছুঁড়েছিলেন মদন মিত্র। এবার একেবারে যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ তির্যক মন্তব্য করলেন শুভাপ্রসন্নকে নিশানা করে। আর তাতে স্বাভাবিকভাবেই অপ্রসন্ন হয়েছেন শুভা। তিনিও পালটা মন্তব্য করেছেন।
তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে সায়নী বলেন, অনেকের অনেক সময় প্রত্যাশা না মিটলে বিরূপ মন্তব্য করেন। আমার মনে হয় শুভাদার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। আর প্রয়োজনে মমতাকে ক্ষমতা থেকে সরানো প্রসঙ্গে শুভাপ্রসন্নের বক্তব্যের প্রসঙ্গে সায়নী বলেন, ওঁর কি ১২ বছর আগে এসব মনে ছিল না? তখন তো এসব কথা বলেননি। এখন কেন বলছেন ?
তবে এসব কথা শুনে অবশ্য় চুপ করে থাকার মানুষ শুভাপ্রসন্ন নন। একদা মমতার অতি ঘনিষ্ঠ শিল্পীর গলায় এখন আবার আগুন ঝড়ে পড়ছে। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তৃণমূলের উত্থানে সায়নীদের কী ভূমিকা রয়েছে? সিপিএমের বিরুদ্ধে আমরা যখন লড়াই করছিলাম তখন কোথায় ছিলেন?ওঁর কবে জন্ম হয়েছে? দলের সুখের সময়ে যাঁরা এসেছেন, ইতিহাস নিয়ে যাঁরা কিছুই জানেন না তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলতে ইচ্ছা করে না। রুচিতে বাঁধে। আমার শুধু একটাই প্রশ্ন, কবে জন্ম হয়েছে?
একেবারে মোক্ষম প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন শুভাপ্রসন্ন। তবে শেষ পর্যন্ত এই লড়াই কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিগতদিনে তৃণমূল নেত্রীর কথা বলতে গিয়ে একেবারে প্রশংসার সুনামি ডাকতেন শুভাপ্রসন্ন। বিরোধিতা শুনলেই একেবারে রে রে করে উঠতেন। এমনকী একাধিক ক্ষেত্রে তিনি একেবারে আগ বাড়িয়ে প্রশংসা করতেন। অনেকেই বলতেন বড্ড বেশি তোষামোদ করতেন শুভাপ্রসন্ন। তাঁর এবার এমন উলট পুরাণে হতবাক গোটা বাংলা। প্রশ্ন একটাই, হলটা কী? তবে কি এবার অন্য় নৌকায় ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছেন শুভাপ্রসন্ন?