বাস ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে একটা অসন্তোষ রয়েছে। অনেক যাত্রীর মতে, বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বেসরকারি বাসে। এই বিষয়টি নিয়ে মামলা হওয়ায় বেসরকারি বাসে রাজ্য সরকারের অনুমোদিত ভাড়া টাঙাতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আর বাসে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থাও রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে বেসরকারি বাসের ভাড়া সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায় আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর এবার নতুন করে বাসমালিক সংগঠনগুলিকে পাঠিয়েছে। আর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ভাড়ার তালিকা যাতে সবাই দেখতে পায় সেভাবে টাঙাতে হবে। এই নির্দেশ পেয়ে চাপে বাসমালিক সংগঠনগুলি।
এদিকে এই মামলা ২০২৩ সালে করেছিলেন জনৈক প্রত্যুষ পাটোয়ারি। তাতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বেসরকারি বাসে বেশি ভাড়া নেওয়া ঠেকাতে নানা কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাসে ভাড়ার তালিকা টাঙানো থেকে শুরু করে লিখিত অভিযোগ জানানোর জন্য পৃথক খাতা রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। পরিবহণ দফতরে অভিযোগ জানাতে হেল্পলাইন নম্বর চালু করতেও বলা হয়েছিল। অভিযোগ পেলে দ্রুত তা খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এবার পরিবহণ দফতর পুরনো নির্দেশই নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: অমিত শাহের সভা বাতিল হয়ে গেল, শেষ মুহূর্তে এমন পরিস্থিতির নেপথ্য কারণ কী?
পরিবহণ দফতরের এই নির্দেশ পেয়ে চাপে পড়ে গিয়েছে বেসরকারি বাসমালিক সংগঠনগুলি। তাই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বাসমালিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই বিষয়ে অল বেঙ্গল বাস–মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্ট ভাড়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বাসমালিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার ওই মামলায় নিজেদের অবস্থান জানায়নি। তাই আমরা আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছি। নানা ধরনের খরচ বেড়েছে। সারা দেশে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের ভাড়া নির্ধারণে একটিই নীতি আছে। সেই নীতি মানা হচ্ছে না। ফলে পরিষেবা ভেঙে পড়ছে।’
বাস ভাড়ার বিষয়টি কিছুতেই মিটছে না। কলকাতা হাইকোর্টের রায় রাজ্য সরকার মানতে চাইলে মানছে না বাসমালিক সংগঠন বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেছেন, ‘বাসের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে ২০২০–২১ সালে দু’টি কমিটি তৈরি হলেও তাদের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য সরকারকে সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পুরনো বাস বাতিল করে নতুন বাস নামানো, ভাড়া বাড়ানো—সব দিকই দেখতে হবে। তবে এই সরকারি নির্দেশ নিয়ে চাপ বাড়লে বেসরকারি বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর।