রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত নতুন কিছু নয়। এরইমধ্যে বিধানসভার স্পিকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। এবার নজিরবিহীনভাবে তৃণমূলের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'র সম্পাদকীয়তে রাজ্যপালকে আক্রমণ করা হলো। সম্পাদকীয়তে রাজ্যপালকে 'বঙ্গশত্রু' তকমা দেওয়া হয়েছে।
'জাগো বাংলা'র সম্পাদকীয়তে রাজ্যপালকে আক্রমণ করে লেখা হয়েছে, 'একুশের নির্বাচন থেকে শুরু করে কলকাতা পুরভোটে বিজেপি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তাদের শূন্যতা ঢাকার চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল।' মুখপত্রে জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল পদের অপমান করছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে 'জাগোবাংলা'র সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, 'রাজ্যপাল সাংবিধানিক এবং সম্মানের পদ। তবে কেউ যদি এই পদকে অপমান করে তাহলে সে ক্ষেত্রে প্রতিবাদ না করে থাকা সম্ভব নয়।' এই বিষয়টি উল্লেখ করার পরেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নাম করে সমালোচনার বন্যা বইয়ে দেওয়া হয়েছে সম্পাদকীয়তে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, 'রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বিজেপিকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করছেন।'
রাজ্যপালকে এভাবে সমালোচনার মধ্যেই তাঁর দার্জিলিংয়ে যাওয়া নিয়ে বাম জমানায় কথা উল্লেখ করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে। লেখা হয়েছে, ' বাম জমানা থাকলে অশান্তির কারণে আপনি দার্জিলিংয়ে যেতে পারতেন না।'
অন্যদিকে, বিজেপি নেতাদের গোর্খাল্যান্ডকে পৃথক রাজ্য করা দাবি নিয়েও রাজ্যপালকে আক্রমণ করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে। সেখানে লেখা হয়েছে, ' বিজেপি নেতারা যখন বঙ্গভঙ্গ করার দাবিতে সরব হয় তখন কোন রকমের টুইট করতে দেখা যায় না রাজ্যপালকে'।
প্রসঙ্গত, সোমবার লোকায়ুক্ত নিয়োগ সংক্রান্ত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে রাজ্যপালকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেছেন, ' আমি মনে করি প্রত্যেকের সাংবিধানিক গণ্ডির মধ্যে থেকে কাজ করা উচিত।' এছাড়াও সম্প্রতি একের পর এক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হাওড়া পুরসভা সংশোধনী বিল। যেখানে এখনও সই করেননি রাজ্যপাল। এরইমধ্যে আবার পরামর্শদাতা নিয়োগের নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্য সচিবের কাছে তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত আরো বাড়তে পারে বলে অনুমান করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশের।