মেডিক্যাল কলেজে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আধ ঘণ্টার মধ্যেই সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। আজ বুধবার বেলা ১টা নাগাদ তিনি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়ে রাজ্য। বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশে মৌখিকভাবে স্থগিতাদেশ দেয়। অন্যদিকে, ডিভিশন বেঞ্চের স্থগিতাদেশের প্রতিলিপি দেখাতে না পারায় সিবিআই কেএফআইয়ের করার পালটা নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: এই মামলার সঙ্গে বৃহত্তর স্বার্থ জড়িয়ে আছে, প্রাথমিকের একটি মামলা ছাড়লেন বিচারপতি
সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা ইতিশা সোরেন। তার অভিযোগ ছিল, চলতি বছরের মে মাসে তিনি নিট দিয়েছিলেন। তার ফল প্রকাশ হয়েছিল গত জুলাইয়ে। তাতে তার র্যাঙ্ক হয়েছিল ২৮৩১৯। তিনি একজন তফশিলি উপজাতিভুক্ত প্রার্থী। তার অভিযোগ, তিনি প্রথম এবং দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পরেও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে পারেননি। অথচ অনেকেই ভুয়ো শংসাপত্র তৈরি করে ভর্তি হয়েছেন। সেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের কাছে জবাব চেয়েছিলেন। এর পাশাপাশি ডিরেক্টরেট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন দেবাশিস ভট্টাচার্যকেও তলব করেছিলেন। এর আগে বিচারপতি তফসলি জাতিভুক্ত এবং উপজাতিভুক্ত প্রার্থীদের শংসাপত্রের প্রতিলিপিও আদালতে জমা দিতে বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তখন বিচারপতি জানিয়েছিলেন যদি সরকারি মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম ধরা পড়ে তাহলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে অবিলম্বে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হবে। আর তারপরে এ দিন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের পরেই তৎক্ষণাৎ বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল অবিলম্বে এই মামলায় সিবিআইকে যুক্ত করতে হবে। দুপুরে দুপুর আড়াইটার মধ্যে সিবিআইকে সেই নির্দেশনামা দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেন বিচারপতি। এরপরে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এক পক্ষের বক্তব্য শুনে এই নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বক্তব্য শোনা হয়নি। এরপরেই ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিবিআই তদন্তের নির্দেশে অন্তর্বতীকালীন স্থগিতাদেশ দেয়। নথি তুলে দেওয়ার নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। এরপর বিচারপতি মামলার লাইভ স্ট্রিমিং অথবা স্থগিতাদেশের কপি দেখাতে বলেন। কিন্তু, তা দেখাতে পারেননি আইনজীবী। এরপরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে।