পেট্রল–ডিজেলের দাম বেড়েছে। লাগামছাড়া এই দামবৃদ্ধির ফলে বাসভাড়া বাড়াতে হবে। এটাই ছিল বাস মালিকদের দাবি। কিন্তু এই দাবিতে সাড়া দিল না কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তাঁর রায়ে বলেছেন, যাত্রী সাধারণের সঙ্গে বাস মালিকদের স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। আর রাজ্য সরকারের এক্ষেত্রে নীতিগত বিষয়ের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই সমন্বয় রক্ষাও সরকারকে করতে হবে।
কী বক্তব্য ছিল বাস–মালিকদের? কলকাতা হাইকোর্টে তিনটি বাস ও মিনিবাস অপারেটর সংগঠনের বক্তব্য ছিল, বাস চালিয়ে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একাধিক পরিবারও ক্ষতির সম্মুখীন। তাই জ্বালানির দামের সঙ্গে যাত্রী ভাড়ার ভারসাম্য থাকা উচিত। সেটা না থাকায় লোকসান হচ্ছে। আর জ্বালানির দামবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে বর্ধিত মূল্য যাত্রীদের বইতে হবে। না হলে সরকারকে বহন করতে হবে। যদিও রাজ্য সরকার ভাড়া বাড়ানোর বিপক্ষে।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য কী? আদালতে রাজ্য সরকারের জবাব, জ্বালানির দাম বাড়লেই যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধির দাবি অবাস্তব। কারণ সেক্ষেত্রে গাড়ি মালিকদের ইচ্ছামতো যাবতীয় যাত্রী ভাড়া প্রতিনিয়ত পুনর্বিবেচনা করে যেতে হবে। যদিও রাজস্ব বা শুল্কের সঙ্গে রাজ্যের নীতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কোনও সাংবিধানিক ভুল না থাকলে তেমন নীতিগত হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
রায়ে কী বলল কলকাতা হাইকোর্ট? দু’পক্ষের সওয়াল–জবাব শোনার পরএ রায়ে বলা হয়, এই বিতর্কের সঙ্গে বিপুল সংখ্যক যাত্রী ছাড়াও পণ্য পরিবহণ ভাড়ার সম্পর্ক আছে। গণপরিবহণ ব্যবস্থায় শুল্ক আরোপের ক্ষমতা প্রশাসনের। সেখানে রাজ্য–কেন্দ্রের প্রশাসনিক নীতির সম্পর্ক আছে। সাংবিধানিক ত্রুটি না থাকলে সেখানে আদালতের হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এমনকী ওই আইন অনুসরণে রাজ্যের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষমতায় হাত দেওয়ারও সুযোগ নেই।